:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
গৌতম মিত্র

কবি, প্রাবন্ধিক

‘ক্যাম্প’-এর ট্রেস
প্রচ্ছদ: রাজিব রায়

জীবননামা - ১

‘ক্যাম্প’-এর ট্রেস

১৯২৯-এর শেষ দিককার ৩/৪ মাস জীবনানন্দ দাশের ডিব্রুগড়ে কেটেছে। গল্পে আমরা মাকুম তিনসুকিয়া হয়ে ডিব্রুগড় যাত্রার নিখুঁত বর্ণনা পাই। সমসাময়িক ডায়েরিতেও পাই।

আমরা জানি ডিব্রুগড়ে জীবনানন্দ দাশের কাকা অতুলানন্দ দাশের বাড়ি ছিল। জীবনানন্দ হয়তো চাকরির খোঁজে গিয়েছিলেন হয়তো না।

শোভনা অতুলানন্দ দাশের মেয়ে। শোভনা আমাদের জানিয়েছেন, মিলুদা দরজা বন্ধ করে তাঁকে কবিতা শোনাতো, শোভনার মা সরযুবালাদেবী রাগে গজগজ করতেন।

‘ক্যাম্পে’ কবিতাটি আসামে বসে লেখা না হলেও, ‘ঘাই হরিণীর’ অনুষঙ্গে আমাদের আসামের কথা মনে পড়ে। তবে সে-তো পরোক্ষ।

‘ক্যাম্পে’ কবিতার খসড়া পাঠে আমরা এক অন্য জীবনানন্দকে আবিষ্কার করি। কোনও আড়াল নয়, সরাসরি লিখছেন, ‘ক্যাম্পে ছিলাম শুয়ে আসামের জোকাই জঙ্গলে’

জোকাই জঙ্গল। ছবিসূত্র: mapsofindia.com

কাকা অতুলানন্দ দাশ ফরেস্ট অফিসার ছিলেন। জোকাই তো ডিব্রুগড় থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে। শোভনা সাক্ষাৎকারে আমাদের জানিয়েছেন, জীবনানন্দ থাকাকালীন বাড়ির সবাই শিকারে গিয়েছিলেন। জীবনানন্দ শিকার পছন্দ করতেন না, যাননি। শোভনাও যাননি, শরীর খারাপ ছিল বলে।

প্রকাশিত ‘ক্যাম্পে’ কবিতায় কোথাও নাহরের কথা নেই, অথচ খসড়ায় বারবার, ‘নাহরের ঘন বন দাঁড়ায়েছে নিকটে নীরব’। নাহর আসামে সহজে দেখা মেলে এমন বৃক্ষ। নাহারকাটিয়া নামে একটি জায়গাও আছে। বাংলা বা ত্রিপুরায় এটিই নাগেশ্বর। মূলত শ্রীলঙ্কার গাছ।

তো জীবনানন্দ যখন এইসব খসড়া থেকে ফাইনালি ‘ক্যাম্পে’ কবিতাটি লিখলেন সযত্নে ‘আসাম’-এর অনুষঙ্গগুলো বাদ দিলেন কেন!

ডায়েরির সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছি, জীবনানন্দের কাছে লেখা একধরনের মিথষ্ক্রিয়া। কতো চরিত্র, ঘটনা, আবহাওয়া যে জাদুবলে অন্য পটভূমি হয়ে উঠেছে, অবাক হতে হয়। পলিটিক্সও এমনই একটা বিষয়।

জীবনানন্দ দাশের মতো পলিটিকাল কবি বিরল! তা সে যে কোনও রাজনীতিই হোক।

১লা বৈশাখ ১৪২৬

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.