চলচ্চিত্রের কাহিনী (পর্ব-২)
চলচ্চিত্রিক মানসিকতা : চলচ্চিত্রের কাহিনী (পর্ব-১) এর পর থেকে-
মূল বক্তব্যে ফিরে আসি। মঞ্চের মত সিনেমাতেও ভাল অভিনয়ের গুরুত্ব অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু সিনেমায় একজন অভিনেতার অভিনয় লাইট ক্যামেরা আর এডিটিংয়ের ভিতর দিয়ে দর্শকের কাছে পৌঁছায়। আর এই লাইট ক্যামেরা আর এডিটিংয়ের পরশে ভাল অভিনয় খারাপ হয়ে যেতে পারে, আবার খারাপ অভিনয় ভাল হয়ে যেতে পারে। বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে একটু ব্যাখ্যা করি।
ধরেন, একজন অভিনেতা চড়া কণ্ঠে অভিনয় করল। এডিট প্যানেলে অডিও লেভেলটা নামিয়ে দিলেই প্রতাপশালী সেই অভিনেতার কণ্ঠ মুহূর্তেই মিনমিনে হয়ে যাবে। অপর দিকে যে উচ্চ স্বরে ডায়লগ দিতে পারেনি তার লেভেলটা বাড়িয়ে দিলেই ঝামেলা শেষ। অথবা ধরেন, নায়ক বলল, “আমি (২ সেকেণ্ডের বিরতি) তোমাকে (১ সেকেণ্ডের বিরতি) ভা্লোবাসি।” (লম্বা বিরতি) নায়িকা বলল, “কিন্তু (৩ সেকেণ্ডের বিরতি) আমি তোমাকে (১ সেকেণ্ডের বিরতি) ভালোবাসি না।” মঞ্চে এই ধীর গতির ডায়লগ থ্রোয়িংকে নায়ক নায়িকা না চাইলে কোন ভাবেই গতিশীল করা যাবে না। কিন্তু সিনেমায় এটা বাম হাতের খেলা।
ধরেন, এডিট করার পরে দৃশ্যটা যদি এমন দাঁড়ায়, তাহলে? নায়কের চেহারা ও ডায়লগ- “আমি”, কাট। নায়িকার চেহারা এবং অফ ভয়েসে নায়কের ডায়লগ- “তোমাকে”, কাট। নায়কের চেহারা ও ডায়লগ- “ভালোবাসি”, কাট। নায়িকার চেহারা ও ডায়লগ- “কিন্তু”, কাট। নায়কের চেহারা, অফ ভয়েসে নায়িকার ডায়লগ- “আমি তোমাকে”, কাট। নায়িকার চেহারা ও ডায়লগ- “ভালোবাসি না”। র্অথ্যাৎ নায়ক নায়িকার থেমে থাকা অংশগুলোকে যদি পরিচালক কেটে ফেলে দেয় তো ডায়লগের গতি না বেড়ে কি উপায় আছে? তবে এটাই এক মাত্র উপায় নয়। বক্তার ডায়লগের প্রতিটি বিরতিতে আপনি শ্রোতার এক্সপ্রেশনের শট এবং কিছু মিউজিক বা সাউণ্ড এ্যাফেক্ট ব্যবহার করেও বিষয়টাতে গতিশীলতার অনুভুতি দিতে পারেন। হিন্দি সিরিয়ালে এই ফরমুলাটা ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়।
এতো গেল এডিটিংয়ের বিষয়। এবার আসি ক্যামেরার প্রসঙ্গে। মঞ্চে যখন নাটক চলে, তখন দর্শক কয়েকজন অভিনেতার মাঝে কার দিকে তাকাবে, সেটা দর্শকের ব্যপার। যদিও দর্শকের মনোযোগ নির্দিষ্ট অভিনয় শিল্পীর দিকে আকৃষ্ট করার কিছু উপায় আছে, তারপরও দর্শক সেটাকে বাইপাস করে অন্য অভিনেতার দিকে তাকিয়ে থাকতেই পারে। অথবা র্নিদিষ্ট অভিনেতার হাতের দিতে তাকাবে নাকি পায়ের দিকে তাকাবে সেটাও অনেকখানি দর্শকের ইচ্ছার অধীন। কিন্তু সিনেমায় বিষয়টা পুরোপুরি ডাইরেক্টারের অধীনে। তার র্নিদেশনায় ক্যামেরা যাকে দেখাবে, দর্শক তাকেই দেখতে বাধ্য। এমন কি হাত দেখবে না, পা দেখবে সেটাও পরিচালকের ইচ্ছা।
সত্যি বলছি, পরের শটটা দেখে মনে হচ্ছিল নায়িকা হাঁটতে শুরু করলেও যেন মন থেকে নায়ককে ছেড়ে যেতে চাইছে না। ক্যামেরার ফ্রেম যেন নায়িকাকে টেনে ধরে রাখতে চাইছে। অথচ মেয়েটা দুই বারই একই ভাবে অভিনয় করেছিল। সেদিন প্রথম বুঝেছিলাম ক্যামেরার নিজেস্ব একটা ভাষা আছে। সেই ভাষাকে অস্বীকার করে সিনেমায় কোন গল্পই বলা সম্ভব নয়।
এখানে বলে রাখা ভাল, ইউনিটের আর সবার মত ক্যামেরাম্যানদেরও পরিচালকের অধীনে থাকাটাই নিয়ম। কিন্তু আমাদের দেশের অনেক পরিচালকের অজ্ঞতার কারণে ক্যামেরাম্যানরা প্রায় সময়ই পরিচালকদের পরোক্ষ ভাবে পরিচালিত করে। আর যদি পরিচালক অতি অজ্ঞ হয়, তবে তো লাইটম্যান, মেকআপম্যান, এডিটর এবং অবশ্যই নায়িকা পরিচালককে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই গোটা পৃথিবী দেখিয়ে ছাড়ে।
যাহোক, যেহেতু সিনেমায় কোন বস্তু বা ব্যক্তিকে অনেক কাছ থেকে দেখানো যায়- যা মঞ্চে সম্ভব নয়, তাই সিনেমার স্ক্রিপ্টে ডায়লগের ব্যবহার কমিয়ে ফেলতে হয়। অর্থাৎ মঞ্চে বিষয়টা এমন- নায়ক টেবিলে কিছু খোঁজাখুঁজির পর একটা কলম মুখের কাছে নিয়ে বলবে ‘যাক, পেলাম তাহলে কলমটা।’ টেবিলের উপরে র্দশকের চোখ যাবে না, তাই খুঁজে পাওয়ার পরে কলমটা উচু করে র্দশকেরদের দেখানো এবং হলের সবচেয়ে পিছনের সিটে বসা লোকটা ছোট কলমটা উঁচু করার পরেও দেখতে পাবে না, তাই ডায়লগ এখানে অতি জরুরী। কিন্তু সিনেমায় শুধু ক্লোজ শটে কলমটা খুঁজে পাওয়া দেখালেই চলবে। অর্থাৎ লেস ডায়লগ, মোর সিন বা সীমিত সংলাপ, অধিক দৃশ্য- এই হল সিনেমা।
এভাবে ক্যামেরার আরো অনেক টেকনিকাল বা প্রায়োগিক বিষয় রয়েছে যা অভিনয় ও কাহিনীকে সাংঘাতিক ভাবে প্রভাবিত করে। ছোট্ট একটা ঘটনা বলবার লোভ সামলাতে পারছি না। তখন আমরা রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারের সহায়তায় আব্দুস সামাদ স্যারের গড়ে তোলা ফিল্ম ইস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের ছাত্র। (সামাদ স্যার পরবর্তিতে স্ট্যামর্ফোড ইউনিভার্সিটিতে ফিল্ম এন্ড মিডিয়া ডিপার্টমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন)। আমাদের তখন প্র্যাকটিকাল সেশন চলছে। দৃশ্যটা হল, ভীষণ ভালবাসবার পরেও নায়কের বেশ কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে নায়িকা নায়ককে ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। নায়ক তাকে যেও না, যেও না, বলে পিছু ডাকছে।
দৃশ্যটা স্যার দু’ভাবে শুট করালেন। ফিক্সড ফ্রেম মেয়েটা হাঁটতে হাঁটতে ফ্রেম থেকে বেরিয়ে গেল। আরেকটা, মেয়েটা হেঁটে চলে যাচ্ছে আর ক্যামেরায় জুম ইন বা জুম চার্জ করা হচ্ছে। এডিট প্যানেলে বসে স্যার প্রথমে প্রথম শটটা ব্যবহার করলেন। মানে নায়ক নায়িকার ঝগড়ার পরে নায়িকার ফিক্সড ফ্রেমে চলে যাওয়ার শট। স্যার জানতে চাইলেন, “কেমন দেখাচ্ছে?” আমরা বললাম, “ভাল।” একটু হেসে স্যার এবার ফিক্সড ফেমের শটটা সরিয়ে জুম চার্জ করা শটটা লাগালেন। সাথে সাথেই আমরা চেচিঁয়ে উঠলাম, “এই শটটা বেশি ভাল স্যার।” সত্যি বলছি, পরের শটটা দেখে মনে হচ্ছিল নায়িকা হাঁটতে শুরু করলেও যেন মন থেকে নায়ককে ছেড়ে যেতে চাইছে না। ক্যামেরার ফ্রেম যেন নায়িকাকে টেনে ধরে রাখতে চাইছে। অথচ মেয়েটা দুই বারই একই ভাবে অভিনয় করেছিল। সেদিন প্রথম বুঝেছিলাম ক্যামেরার নিজেস্ব একটা ভাষা আছে। সেই ভাষাকে অস্বীকার করে সিনেমায় কোন গল্পই বলা সম্ভব নয়।
আগেই বলেছি, নায়িকা লাল রঙের শাড়ি পরেছে- গল্প বা উপন্যাসের এই লাইনটাকে পাঠক নিজের মত করে ইন্টারপ্রেট করে নিতে পারে। এটা লেখককে অনেকটা সেফ জোনে থাকতে সহায়তা করে। কারণ পাঠক তো তার পছন্দমতো লাল রং এবং মেয়ের কথাই ভাববে। কিন্তু মঞ্চ নাটক বা সিনেমায় আক্ষরিক অর্থেই একটা মেয়েকে লাল শাড়ি পরিয়ে দর্শকের সামনে উপস্থাপন করতে হয়। সেই লাল রং বা মেয়েকে দর্শক পছন্দ নাও করতে পারে। এটা সিনেমার খুব বড় একটা সীমাবদ্ধতা। আর একারণেই অনেক উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ন সেই গল্পের পাঠকদের সব সময় সন্তুষ্ট করতে পারে না।
তবে একটু খেয়াল করলেই বুঝবেন, এই সীমাবদ্ধতাটাই কিন্তু চলচ্চিত্রের অনেক বড় একটা শক্তি। উপন্যাসে একজন লেখক যা বলতে চাইছে, পাঠক তা হুবহু বুঝতে পারে না বা ভেবে নিতে পারে না। অপর দিকে সিনেমায় পরিচালক যা দেখাতে চাইছে হুবহু তা-ই দেখাতে পারছে। তবে ভারী অস্ত্রকে ব্যবহার করার জন্যে শক্তিশালী শরীরেরও তো দরকার। পরিচালককে বেছে বেছে এমন লাল এবং এমন একটি মেয়েকে খুঁজে বের করতে হবে যা বেশীর ভাগ দর্শকের মন ছুঁয়ে যেতে পারবে। নয়ত দর্শক হল থেকে বেরিয়ে বলবে, ‘কোত্থেকে যে এই নায়িকাটাকে ধরে আনছে। নিশ্চয় পরিচালকের খাতিরের লোক, তাই সিনেমায় চান্স পাইছে।‘
অর্থাৎ, একজন চিত্রপরিচালককে দর্শক সাইকোলজিও বুঝতে হয়। জানতে হয় কোন ধরনের কস্টিউম, সেট, কালার, কম্পোজিশন, মিউজিক দর্শকদের উপরে কি ধরনের প্রভাব ফেলে। মূলতঃ এই সব কিছু দিয়েই সিনেমায় একটা কাহিনীকে ফুটিয়ে তোলা হয়। সিনেমা একটি সমন্বিত বিষয়, যেখানে নান্দনিকতা, প্রযুক্তি, মনোবিজ্ঞান সব কিছুর একটি সুষম প্রয়োগ থাকতে হয়। এটা অনস্বীকার্য যে গল্গ উপন্যাসের চেয়ে সিনেমায় একটা কাহিনীকে সফলভাবে বলা অনেক অনেক বেশি কঠিন। আর তাই বিশ্বের প্রখ্যাত সব পরিচালক, যারা দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, একটু খেয়াল করলেই দেখবেন তাদের কাহিনীর মূল লাইন আপটা সাধারণতঃ সোজা সাপটা হয়ে থাকে। তবে উপস্থাপনটা হয়ে থাকে জাঁকজমকপূর্ণ।
আমরা প্রায়শঃই এই ভেবে গর্ব বোধ করি যে, কোন প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশুনা না করেও আমরা কত কিছু করছি। কিন্তু সেই কত কিছুটুকু বিশ্বের অন্য দেশের প্রশিক্ষিত ও পেশাদার ব্যক্তিদের কাজের তুলনায় আদৌও কতটুকু, সেটা ভাববার সময় বোধ হয় এসেছে। যেদিন আমি দারুণ ভাবে প্রশিক্ষিত ও পেশাদার একটি ইউনিট পাবো সেদিন আমিও কাহিনীকেই প্রাধান্য দেব। তার আগ পযর্ন্ত স্বাভাবিক আমার কাছে কাহিনীর চেয়ে সিনেমার টেকনিকাল দিকগুলোর গুরুত্বই বেশি।
চাক দে ইণ্ডিয়া- মিথ্যা অপবাদে অভিযুক্ত এক হকি খেলোয়ার নিজেকে অপবাদ মুক্ত করার জন্যে মহিলা হকি টিমকে গড়ে তোলে। লগন- এক অহংকারী ইংরেজ এক ভারতীয় যুবক তথা ভারতীয় জনগণকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার জন্যে ক্রিকেট প্রতিযোগীতার আয়োজন করে। কিন্তু ভারতীয়রা বিষয়টাকে তাদের জীবন মরণের বিষয় হিসেবে ধরে নেয়। ব্রিজ অন দা রিভার কাওয়াই- যুদ্ধের সুবিধার জন্যে জাপানীরা একটি ব্রিজ বানাতে বন্দি ইংরেজ সৈন্যদের ব্যবহার করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাপানীরা সেই ব্রীজ ব্যবহার করতে পারে না। গ্লাডিয়েটর- রাজ চক্রান্তে পড়ে এক জনপ্রিয় সেনাপতি তার পদ ও পরিবার হারিয়ে জীবনের প্রতি আগ্রহহীন হয়ে পড়ে। কিন্তু বিগত জীবনের খ্যাতির বিড়ম্বনায় পড়ে আবার তাকে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে হয়। এমন আরো অনেক উদাহরণ দেয়া যায়। অপর দিকে, বেশি জটিল কাহিনী দিয়ে যে সফল সিনেমা বানানো সম্ভব নয় তার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হচ্ছে ‘‘ক্লাউড এটলাস’।
সব কথার শেষ কথা হল, ক্যামেরা, এডিটিং, লাইট, কালার, কম্পোজিশন, সেট, কস্টিউম, মিউজিক সব কিছুরই নিজস্ব একটা ভাষা আছে, ক্ষমতা এবং সীমাবদ্ধতা আছে। সেই ভাষা, ক্ষমতা এবং সীমাবদ্ধতা দিয়েই সিনেমায় কাহিনীকে ফুটিয়ে তুলতে হয়। অর্থাৎ একটা কাহিনীকে ফুটিয়ে তোলার উপায় হল- উপন্যাসের ক্ষেত্রে ঝরঝরে ভাষা, মঞ্চ নাটকের ক্ষেত্রে সাবলীল অভিনয় আর সিনেমার ক্ষেত্রে কিছুটা অভিনয় ও বাকিটা টেকনিকাল বিষয়সমূহ।
অনেকেই আলফ্রেড হিচকক বা টরান্টিনোর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বিশ্বের অনেক বড় বড় পরিচালক ভাল কাহিনীকে প্রাধান্য দিয়েছেন। কথা সত্য। তবে কি জানেন, হিচকক বা টরান্টিনোর ইউনিটের লোকেদের যে যোগ্যতা আর পেশাদারিত্ব তাতে করে তাদের শুধু কাহিনী নিয়ে ভাবলেই চলে। বাংলাদেশের বিষয়টা একটু ভিন্ন। মিডিয়া জগতে কাজ করা আমার এক শ্রদ্ধেয় বড় ভাইয়ের এক ঘটনা দিয়ে আমার লেখা শেষ করতে চাই।
কোন এক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর একটি ইভেন্ট, যা কোন এক টিভি চ্যানেল পাঁচ কি ছয় ক্যামেরায় লাইভ কাভার করছে। ইভেন্টের পুরো দায়িত্ব আমার সেই বড় ভাইয়ের কাঁধে। বিদেশ থেকে আসা কোম্পানীর প্রতিনিধি এক পর্যায়ে প্রশ্ন করে বসল, “শুনলাম তোমার সেট ডিজাইনার নাকি কোন আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশুনা করেনি।” উত্তর, “না, করেনি।” বিদেশী অবাক, “বলো কি?! আরো শুনলাম তোমাদের ক্যামেরাম্যানরাও নাকি কোন ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশুনা করেনি?” আবারও উত্তর, “না। তারা কাজ করতে করতে শিখেছে। এমন কি সাউণ্ডে আর লাইটে যারা আছে তারাও কাজ করতে করতে শিখেছে। কোন ইনস্টিটিউটের ছাত্র না।” এবার বিদেশীর চক্ষু চড়ক গাছ, “তা কি করে হয়? আর তুমি? তুমি তো ম্যানেজমেন্টের ছাত্র?” উত্তর, “না, আমিও কাজ করতে করতে ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট শিখেছি।” এবার বিদেশী শুধু ছোট্ট করে বলল, “ইউ অল আর ক্রেজি।”
আমরা প্রায়শঃই এই ভেবে গর্ব বোধ করি যে, কোন প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশুনা না করেও আমরা কত কিছু করছি। কিন্তু সেই কত কিছুটুকু বিশ্বের অন্য দেশের প্রশিক্ষিত ও পেশাদার ব্যক্তিদের কাজের তুলনায় আদৌও কতটুকু, সেটা ভাববার সময় বোধ হয় এসেছে। যেদিন আমি দারুণ ভাবে প্রশিক্ষিত ও পেশাদার একটি ইউনিট পাবো সেদিন আমিও কাহিনীকেই প্রাধান্য দেব। তার আগ পযর্ন্ত স্বাভাবিক আমার কাছে কাহিনীর চেয়ে সিনেমার টেকনিকাল দিকগুলোর গুরুত্বই বেশি।
সমাপ্ত
প্রচ্ছদে ব্যবহৃত ছবি : pablo.buffer