শব্দের পাশে বেঁচে ওঠো প্রিয় শামুক
শহরের সন্ধ্যা যখন রাত্রির পেটে ঢুকে পড়ে, সে দেখে রাত্রির গাছগুলি আকাশের দিকে পাতাদের মেলে দিচ্ছে। রাত্রির পেটে শহরের গাছেরা হয়তো ভাবে তারা একটা আদিগন্ত বনের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। গাছের পাতাগুলি ধূলি ঝাড়তে ঝাড়তে ক্রমে সবুজ হতে থাকে। নিধান ও নৈর্ঋতে জেগে থাকা শস্যরূপ আকিঞ্চনের সুর উড়ে যায়, আমি জানি না, একা শীতকাল কোন রাত্রির বুকে পুড়ে ছাই?
কে দিয়েছিলো ডাকনাম, মনে নাই। কে নাম ধরে ডাকে? পেছন ফিরে দেখি কেউ নাই। কেবল আমি আর ছায়া মিলে হেঁটে হেঁটে পথ বানাই। আমরা নিজেদের বুকের ভিতর হাঁটি। বুকের ভিতর শালবন আছে। মাঠ পেরোলে শালবন ডাকে আয় আয়। শালবন অন্ধকারে ঢুকে আমি একা হয়ে যাই। অন্ধকার আমার ছায়ার আততায়ী হয়ে হাসে। আমিও হাসি ছায়ার ভারে ডুবে যাচ্ছিলাম পথে। মাথার ভিতর নিভে যাচ্ছিলো প্রাচ্যের সকল আকাশ। এখন অন্ধকারেই একটুখানি অবকাশ জেনে বসে আছি। কোথাও রুমালের ভাঁজে লুকিয়ে আছে ছুরি। ছুরির ধরন জানে না কেউ। কেবল অস্তিত্ব জানে। কোথাও দ্রাক্ষার বনে ঘুরে ঘুরে রোদে পুড়ে গেছে ত্রস্ত যৌবন। কোথাও আপেলের বনে ঢুকে অন্ধ হয়ে গেছে হাতের আঙুল। বৃত্তাকার পাথর সে তো সিসিফাসের অহমের সব থেকে সুন্দর ফুল। নির্ঘুম অবরোহণ আর আরোহণে সংসারকে প্রহসন বানায়।
কে দিয়েছিলো ডাকনাম, মনে নাই। কে নাম ধরে ডাকে? পেছন ফিরে দেখি কেউ নাই। কেবল আমি আর ছায়া মিলে হেঁটে হেঁটে পথ বানাই। আমরা নিজেদের বুকের ভিতর হাঁটি। বুকের ভিতর শালবন আছে। মাঠ পেরোলে শালবন ডাকে আয় আয়। শালবন অন্ধকারে ঢুকে আমি একা হয়ে যাই। অন্ধকার আমার ছায়ার আততায়ী হয়ে হাসে।
ঘুম সে এক রুপালি আরক। হাজার বছর লুকিয়ে ছিলো চায়ের পাতার ভিতর। একদিন ঘর ভেঙে, দ্বার ভেঙে উড়ে গেলে জোছনার কারিগর, পথে পড়ে থাকে তার চোখের পালক। সে কোথাও গভীর জলের তলে মাছ হয়ে যায়, ধ্যানগ্রস্থ পাথরের পাশে থির পাথর হয়ে যায়। কপালে রক্তচন্দন মেখে উঠে যায় সে শরীরের খাঁচার থেকে, বাসনার তোরঙ্গ থেকে। রক্তনীল দেশ এক পায়ের কাছে এসে পড়ে থাকে তার, সে টের পায় না কিছুই। তাকে কোনোদিন একটা নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়েছিলো কেউ। কল্পনার অভাবিত সুন্দর এক নদী। কেবল সে গিয়েছিলো দুচোখ বুজে, আর তার সঙ্গে একটি শামুকের দেখা হয়ে গেলো। সে চোখ খুলে দেখলো খোলস ছেড়ে মুখ বাড়িয়ে আছে শামুক। এই শামুকের চোখের ভিতর গভীর বনাঞ্চল, এই শামুকের হাতের পিঠে প্রজাপতির দল। এই শামুকের কান্না শুনে বাদল গুমরে মরে, এই শামুকের বুকের মধ্যে কঙ্কপাখি উড়ে।
ঘুম সে এক রুপালি আরক। হাজার বছর লুকিয়ে ছিলো চায়ের পাতার ভিতর। একদিন ঘর ভেঙে, দ্বার ভেঙে উড়ে গেলে জোছনার কারিগর, পথে পড়ে থাকে তার চোখের পালক। সে কোথাও গভীর জলের তলে মাছ হয়ে যায়, ধ্যানগ্রস্থ পাথরের পাশে থির পাথর হয়ে যায়। কপালে রক্তচন্দন মেখে উঠে যায় সে শরীরের খাঁচার থেকে, বাসনার তোরঙ্গ থেকে। রক্তনীল দেশ এক পায়ের কাছে এসে পড়ে থাকে তার, সে টের পায় না কিছুই। তাকে কোনোদিন একটা নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়েছিলো কেউ। কল্পনার অভাবিত সুন্দর এক নদী। কেবল সে গিয়েছিলো দুচোখ বুজে, আর তার সঙ্গে একটি শামুকের দেখা হয়ে গেলো। সে চোখ খুলে দেখলো খোলস ছেড়ে মুখ বাড়িয়ে আছে শামুক। এই শামুকের চোখের ভিতর গভীর বনাঞ্চল, এই শামুকের হাতের পিঠে প্রজাপতির দল। এই শামুকের কান্না শুনে বাদল গুমরে মরে, এই শামুকের বুকের মধ্যে কঙ্কপাখি উড়ে।
সে বললো, ‘একটি শব্দের পাশে বেঁচে ওঠো প্রিয় শামুক। স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে নদী মাঠ টলটলে সরোবর। পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে বাঁধা সুতো। ছিঁড়ে যাচ্ছে দেখো। তাকে শব্দতরঙ্গে বাঁচাও। দিনগুলি ফুরিয়ে যাচ্ছে। কুসুমিত হবে না আলো। অন্তহীন রাতের ধারে তুমি সূর্য হয়ে যাও।’
আর শামুক নিজেকে গুটিয়ে নিলো নিজের খোলসের ভিতর। আর কোনোদিন বের হলো না।
ব্যবহৃত শিল্পকর্ম : নির্ঝর নৈঃশব্দ্য, মাধ্যম: অ্যাক্রিলিক অন ক্যানভাস