গোলাপের স্ক্রিনশট
মূল বই জটিল হলেও, সহজ অনুবাদ চায় লোকে : জি এইচ হাবীব
বইমেলার শুরুতে
– আজ ইন্টারভিউ পড়লাম একোর। ‘গোলাপ’ কবে আসছে? উনি লিখতে মাত্র ২ বছর নিয়েছিলেন। অনুবাদে কতদিন নিলা?
– ১৬ বছর; অন অ্যান্ড অফ, এর মাঝে অবশ্য আমার ১০ টা বই প্রকাশ হয়েছে।
– অবসেসন ছিল বলা যায় কি?
– গোলাপটা (দা নেম অব রোজ) পড়ে খুবই ভালো লেগেছিল। প্রায় সাথে সাথেই অনুবাদ করতে বসে যাই। কিন্তু দেখি যে নানান বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়, বর্ণনা, বাক্যের দৈর্ঘ্য, … সেসব জটিলতা কাটাতে কাটাতে অনেক সময় লেগে গেল। এর মধ্যে জীবনের নানান পর্ব পার হতে হল, বেশ ক্রুশিয়াল কিছু পর্ব, মাঝে আরো অনেক বই পত্র হাতে আসলো, ভালো লাগলো, সেগুলো অনুবাদ করতে বসলাম যেহেতু ‘গোলাপ’ টানা করে যেতে পারছিলাম না, মাঝে ‘গোলাপ’ এর সাথে সংশ্লিষ্ট ‘লাতিন ভাষার কথা’টা করলাম। ভেতরে ভেতরে একটা চ্যালেঞ্জ আর অস্থিরতা অনুভব করছিলাম, সব মিলে একটা কার্নিভাল পরিস্থিতি বইটাকে নিয়ে। এই করতে করতে ১৬ বছর কেটে গেল।
– আমার কন্যাকে লাতিনে মাতানোর জন্য উপহার দিলাম (‘লাতিন ভাষার কথা’ বইটা হাবীবের কাছ থেকেই সদ্য উপহার পাওয়া)। কিছুটা পড়েছি আমি। ইন্টারেস্টিং লাগছে!
– হুম
– এই বইটার (গোলাপ) জগত তো এক বিশাল বিচিত্র জগত বলে মনে হচ্ছে!
– মনে হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন সময় নিয়ে করতে পারলে ভালো হতো। যাই হোক, কিছু জায়গায় অসন্তুষ্টি থাকলেও মোটামুটি পারা গেছে। কিন্তু দ্বিতীয় সংস্করণের সময় আবার এডিট করতে হবে। .. এবার অবশ্য প্রুফ দেখার সময় মোটামুটি ভালই এডিট করেছি।
– বিশাল কাজ!
– হুম। ভয় হচ্ছে যে কতটুক কি করতে পারলাম। কি রকম গালি টালি খাই।
– গালি কেন খাবে? পাঠক তো বেশিরভাগই অনুবাদ নির্ভর পাঠক। মূল বই পড়েছে কয়জন? যারা মূল পড়েছে তাঁরা কি আবার বাংলা পড়ে? তোমার অনুবাদের একটা মান আছে। টেনশন নিও না।
– আসলে পরিস্থিতি তো জটিল। সব বইয়ের সহজ অনুবাদ চায় লোকে। মূল বই জটিল হলেও সেটার সরল অনুবাদ চাই তাদের… আবার নিজেও আসলে কতটা করতে পেরেছি বইটা ইংরেজিটা পড়েছেন কিনা জানিনা.. অনুবাদ ক’রে সন্তুষ্ট হওয়া মুশকিল।
– পড়িনি। ইংরেজি কমই পড়া হয়। কিন্তু বইটা খুব জটিল বলেই ধারনা হয়েছে।
– এমনিতে মার্ডার মিস্ট্রি। কিন্তু তার সাথে নানান ঐতিহাসিক ধর্মতাত্ত্বিক দার্শনিক, ভাষিক, মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার আছে। পটভূমিকা ও আমাদের কাছ থেকে একটু দূরের।
– বইয়ের ভিতরে ঢুকে গেলে সেই পটভূমি নিজের হয়ে যায় না কি?
– পুরো টেক্সটে নানান ভাষার শব্দ/ ফ্রেজ ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু অনুবাদ দেয়া হয় নাই। তাতে জটিল হয়ে গেছে। ইংরেজি অনুবাদে তো একটা ফুটনোট বা কোন ভূমিকা নাই। ভাগ্যিস দ্বিতীয় বইটা ছিল, যেখানে এসব শব্দ, ফ্রেজ ইত্যাদির অনুবাদ দেয়া আছে। হিস্টোরিক্যাল নানান চরিত্রের জীবন ও কাজ সম্পর্কে বর্ণনা দেয়া আছে। দু তিনটা প্রবন্ধ আছে।
– সাহসের কাজ!
– Fools rush where angels fear to tread
আর একটা মজার ব্যাপার হলো, বইটা যেহেতু মার্ডার মিস্ট্রি, ফলে পড়ার পরে যদিও আমি বুঝতে পারছি ……… (ডিলিট করা হল), কিন্তু কাউকে বলা যাচ্ছে না ভেঙে…। তাতে তার পাঠের আনন্দ নষ্ট হবে।
কয়েকদিন পর
– গোলাপসুন্দ্রী কোথায় আছেন?
– প্রেসে
– কবে আসবেন?
– ২১শের আগে না। ৮৪ রীম কাগজ লাগবে। ৬০ রিম পাওয়া গেছে! ২ লাখ টাকার কাগজ লাগছে!
প্রকাশ হবার পর
– গোলাপের জন্য অভিনন্দন। ঢাকার বাইরে আছি। শুক্র/ শনিতে মেলায় যাব। গোলাপ সংক্রান্ত তোমার সাথে ইনবক্সের কথাবার্তার কপি রাইট নিশ্চয়ই আমার, ধরো আমি ইন্টারভিউয়ার!
(অনেকক্ষণ নীরবতা। সম্ভবত বইমেলায় ভক্তদের সাথে কথপোকথনে ব্যস্ত। উদযাপনের এইতো সময়!)
– হা হা হা! ধন্যবাদ! (হা হা হা-ই তাহলে সম্মতির লক্ষণ!)