মির্জা গালিবের গজল থেকে
প্রিয়র লীলাময় বিচরণের পদচিহ্ন হয়ে পড়ে আছি
১.
সিনে কা দাগ হ্যায় ও নালা কি লব তক না গ্যায়া
খাক কা রিযক হ্যায় ও কাতরা কি দরিয়া না হুয়া
যে আর্তনাদ ঠোঁটে এলো না সে বুকে দাগ কেটে বসে
যে জলবিন্দু নদীতে পৌঁছলো না তাকে মাটি শুষে নেয়
২.
গর নিগাহ গর্ম ফরমাতি রহি তালিমে যবত
শোলা খস মে জ্যায়সে খুঁ রগ মে নিহা হো জায়েগা
তোমার নির্দয় দৃষ্টি যদি এভাবেই সংবরণ শিখিয়ে যায়
শিরায় রক্তের মতো শুষ্ক তৃণে আগুন লুকিয়ে যাবে
৩.
জান দি দি হুয়ি উসি কি থি
হক তো য়ে হ্যায় কি হক আদা না হুয়া
যে প্রাণ দিলাম তোমায় সে তো তোমারই দেয়া
আসল কথা এই – তোমাকে কিছুই দেয়া হলো না
৪.
দর্দ মিন্নতকশে দাওয়া না হুয়া
হাম না আচ্ছা হুয়ে বুরা না হুয়া
বেদনা নিদানের জন্য মিনতি করেনি
আমি ভালো হলাম না, মন্দ হয়নি
৫.
ম্যায় অওর বযমে ম্যায় সে য়ুঁ তশনাকাম আউঁ
গর ম্যায় নে কি থি তওবা সাকি কেয়া হুয়া থা
মদিরা আসর হতে এমন তৃষ্ণার্ত ফিরে এলাম কি না আমি!
আমি না হয় তওবা করেছিলাম, সাকির কী হয়েছিল!
৬.
যিন্দেগি য়ুঁ ভি গুযার হি জাতি
কিঁউ তেরা রাহগুযার য়াদ আয়া
জীবন তো এমনি কেটে যেত
কেন যে তোমার পথের কথা মনে পড়লো
৭.
ফির তেরে কুচে কো জাতা হ্যায় খায়াল
দিলে গুমগশতা মাগার য়াদ আয়া
ভাবনা আবার তোমার গলিতে যেতে চায়
বোধ হয় হারানো হৃদয়ের কথা মনে পড়েছে
৮.
গো ম্যায় রাহা রহিনে সিতমহায়ে রোযগার
লেকিন তেরে খায়াল সে কাভি গাফিল নেহি রাহা
প্রত্যহের তুচ্ছতার কাছে যদিও বন্ধক ছিলাম
তবু তোমার ভাবনায় অবহেলা হয়নি কখনো
৯.
যিক্র উস পরিওশ কা অওর ফির বয়াঁ আপনা
বন গ্যায়া রকিব আখির থা জো রাজদা আপনা
একে সেই পুষ্পমুখির আলাপ, তাতে আমার বয়ান নিপুণতা
যে ছিল প্রাণের দোসর সেই হলো প্রতিদ্বন্দ্বী আমার
১০.
হাম কাঁহা কে দানা থে কিস হুনারপে য়াকতা থে
বেসবব হুয়া গালিব দুশমন আসমাঁ আপনা
এমন কি চৌকশ, কী এমন অনন্য গুণ ছিল আমার!
গালিব, এই ভাগ্য অহেতুক শত্রু হলো আমার
১১.
হ্যায় মুঝে আবরে বাহারি কা বরস কর খুলনা
রোতে রোতে গমে ফুরকত মে ফানা হো জানা
বসন্ত মেঘের বর্ষণ শেষে উন্মুক্ত আকাশ আমার কাছে
যেন বিরহ বেদনার অশ্রুতে নিজেই ভেসে যাওয়া
১২.
খানা বিরাঁ-সাযিয়ে হ্যায়রাত তামাশা কিজিয়ে
সুরতে নকশে কদম হুঁ রফতে রফতারে দোস্ত
বিস্ময়ে সব কিছু হারানোর এই তামাশা দেখে যাও
প্রিয়র লীলাময় বিচরণের পদচিহ্ন হয়ে পড়ে আছি
১৩.
আতা হ্যায় ইক পারায়ে দিল হর ফুগাঁ কে সাথ
তারে নফস কমন্দে শিকারে আসর হ্যায় আজ
প্রতি দীর্ঘশ্বাসে হৃদয়ের টুকরো বের হয়ে আসে
নিঃশ্বাসের সুতোয় প্রতিদান শিকারে ফাঁদ পেতেছে আজ
১৪.
শাম্মা বুঝতি হ্যায় তো উসমে সে ধুঁয়া উঠতা হ্যায়
শোলায়ে ইশক সিয়াহপোশ হুয়া মেরে বাদ
প্রদীপ নিভে গেলে তা থেকে ধোঁয়া ওঠে
আমি নেই তাই প্রেমের আগুন কালো পোশাক পরেছে
১৫.
ঘর জাব বানা লিয়া তেরে দর পর কহে বাগ্যয়র
জানেগা আব ভি তু না মেরা ঘর কহে বাগ্যয়র
তোমার দরজার সামনেই ঘর বানিয়ে নিয়েছি আমি
এবারও কি বলবে আমার ঘরের ঠিকানা জানো না তুমি!
১৬.
কিঁউ জ্বল গ্যায়া না তাবে রুখে য়ার দেখ কর
জ্বলতা হু আপনি তাকতে দিদার দেখ কর
প্রিয়র রূপের বিভায় কেন জ্বলে ছাই হলাম না!
নিজ দৃষ্টির শক্তি দেখে এখন নিজেই জ্বলে মরি!
১৭.
ইন আবলো সে পাঁও কে ঘাবরা গ্যায়া থা ম্যায়
জি খুশ হুয়া হ্যায় রাহ কো পুরখার দেখ কর
পায়ের এই ফোস্কা দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম
পথ ভর্তি কাঁটা দেখে মন খুশি হয়ে গেল
১৮.
লরযতা হ্যায় মেরা দিল য্যাহমতে মেহরে দরখশা দেখ কর
ম্যায় হু ও কাতরায়ে শবনম কি হো খারে বাঁয়াবা পর
উদার সুর্যের কষ্ট দেখে বিচলিত হৃদয় আমার
আমি যে মরুর বুকে কাঁটার ওপরে পড়া শিশির!
২৯.
নাদান হো জো ক্যাহতে হো কিঁউ জিতে হো গালিব
মুঝ কো তো হ্যায় মরনে কি তামান্না কোই দিন অওর
কেন বেঁচে আছো গালিব – এই প্রশ্ন অবুঝের
আমার ভাগ্যে লেখা মৃত্যুর বাসনা নিয়ে আরো কিছু দিন বেঁচে থাকা
২০.
থা খোয়াব মে খায়াল কি তুঝ সে মুআামলা
জাব আঁখ খুল গ্যায়ি না যিয়া থা না সুদ থা
স্বপ্নে আমার ভাবনায় তোমার মুখোমুখি ছিলাম
চোখ খুলে দেখি লাভ নেই, লোকসানও হয়নি কিছু
২১.
ইশক সে তবিয়ত নে যিস্ত কা মযা পায়া
দর্দ কি দাওয়া পায়ি দর্দ লাদাওয়া পায়া
প্রেমে স্বভাব পেয়েছে বেঁচে থাকার আনন্দ
ব্যাথার পেয়েছে ওষুধ আর পেয়েছে সেই ব্যাথা যার কোন ওষুধ নেই