গানের সহস্র কলি নিয়ে তোমাকেই মনে করতে চাই
শীত
১.
আলোতো ওঠেনি আলতো পায়ে, উঠবে বা কেন খামোখায়;
উঠলেও তুমি যে অনাহুত আছো সাথীহারা গভীর আন্ধারে।
গেল বার বসন্তরা গৃহস্থের আঙিনায় এতো ফুল দিয়েছে মান্দারে-
কিন্তু সোপার্জিত সেই রঙ ক্যানভাসে আঁকো নাই!
কী সে অভিমানে বেহুদা যৌবন চলে যাচ্ছে-কেউ তারে ডাকো নাই;
একুশ শতকে দোরে রয়ে গেছে শংকা কি এখনো কেন্নর আকারে?
এতবেশি স্মৃতি এতবেশি কান্নাকাটি,-আমার গভীর হাহাকারে;
রেখেছ যে খাপখোলা তলোয়ার-তাই আছে অবশিষ্ট, আর কিছু রাখো নাই।
জেরুজালেমের ইহুদির মত নালায়েক বলে পেছন ফিরেই দেখি
রয়ে গেছে সেই শীত। অযথা বসন্ত অগ্রগামী ভবিতব্যে ধাবমান।
তোমার খেয়ালে তুমি গুপ্ত আছো-সেহেতু শয়ানে প্রস্ফুটিত ভয়!
যেকোন প্রকারে যৌনতাকে পুঁজি করে আমাকে হারিয়ে দেবে সে কি?
আমার এতযে ধ্যান, এত বিন্দু বিন্দু জ্ঞান ও নির্জ্ঞান
শীতের গভীরে লেজ নাড়ে, সমুখে পেছনে সেকারণে অকুণ্ঠ সংশয়।
২.
স্ত্রীকে বলি, দেখ মেঘমেদুরে আকাশ কালো করে নামছে শীত;
ঘুমাও ঘুমিয়ে পড়ো বেশি রাত করো না, অযথা বকাবকি রাখো।
এই মধ্য রাতে কী আর এমন হবে বরং দুয়েকটা পংক্তিকে ডাকো,
আমার যে আজকাল কী হচ্ছে, বোঝার কোন কিছু বাকি নেই; জ্ঞানত সংগীত-
পরিপ্বার্শ ঘিরে আছে, গীতল ভঙ্গিমা ধরে আছে থরে থরে; সারাটি নিশীথ-
এতবেশি মধুময় হয়ে ওঠে সুফি ঘরানায়- তোমাকে রহস্য বলিনাকো।
বলে কি লভ্যাংশ পাবে? তার চেয়ে মনে মনে বক্র ও সরলে ছবি আঁকো।
এই মরু শুষ্কতায় তেমন বয়ান কই, বারবার ফিরে আসো তুমি, তোমারি তো জিত।
আমি আর ওভাবে কোত্থাও শীতকে মহান করবো না, কারণ সেতো ঝরাতেই থাকে
শুধু সে পারে না কপোলের অশ্রুটাকে মুছে দিতে, সেই গুণ অর্জন করে নাই।
আসছে বসন্তে তাই গানের সহস্র কলি নিয়ে তোমাকেই মনে করতে চাই।
কিন্তু তবু এই শীত লেপ ও কাঁথায় গোপনে অতিশয় প্রিয় হয়ে ওঠে বলে তাকে
ভুলতে পারি না। প্লাটফর্মে শিশুদের ঘুমিয়ে থাকা দেখি-অগভীর মর্ম বেদনায়।
আহা বয়স কমিয়ে নিয়ে ক্রমাগত ক্ষুদ্র হতে হতে-আটচল্লিশেও শিশু হয়ে অবোধে ঘুমাই।
অন্ধকার
দুনিয়াটা কোথায় যে যাচ্ছে!
পাগলে পাগলে চলছে প্রলাপ |
সাদাসিধে কথাগুলো ছুরির মতন
বিধে নিয়ে-লোকেরা সবাই প্রতিপক্ষ যে!
মানুষের গন্তব্য এখন তীব্র লোভের দিকে…
তোমাকে কী রাস্তা বাতলাবো সখা
অহেতুক এই আলোয় একা ছাড়া
কে সাড়া দেবে আর ।
সবাই যে যার মত চাষ করছে নিজস্ব অন্ধকার-
একটি জোনাক পোকাও যেন সেখানে
না জ্বলে-কী তীব্র রাক্ষুসী মন।
হাতে পেয়ালা উঠেছে ব’লে গিলে
খাবে সুরার কারখানা?
বাঁশি আছে বলে সব সুর তোমারই,
আর কারো না!