জেন গল্প
১.
ধ্যান করতে করতে বিরক্ত এক শিষ্য আসলো গুরুর কাছে, বলল: গুরু আমি তো কিচ্ছু পারি না। বসলেই খালি ঘুম আসে। মনোযোগ থাকে না। পা ব্যথা করে। কি করি এখন? আচ্ছা, গুরু বললেন, সবুর ধরো। কেটে যাবে।
অনেকদিন পর। সেই শিষ্য আবার আসলো গুরুর কাছে। বেশ খুশি। বলল, গুরু এখনতো আমার কোনো সমস্যাই নাই। ধ্যানে বসি আর শান্তি শান্তি লাগে। দুনিয়ায় যেন কোনো দুঃখই নাই। গুরু শুনলেন মন দিয়ে। তারপর বললেন: আচ্ছা; সবুর ধরো, কেটে যাবে।
২.
এক শিষ্য গুরুর কাছে আসলো মেলা দুঃখ নিয়ে, গুরু আমি হুটহাট রাগি মাইনষের উপর। পরে, মন খারাপ হয় খুব। কি করতে পারি? এক কাজ করবি, যখনই মেজাজ চড়বে, গিয়া অই কাঠে পেরেক মারা শুরু করবি; বলে একটা কাঠের একটা বেড়া দেখায় দিলেন। এইদিকে শিষ্য রাগে আর গিয়া কাঠে পেরেক মারে। মারতে মারতে পুরা কাঠ ভরায় ফেলল। আর জায়গা নাই মোটেও। তখন আবার গেল সে গুরুর কাছে। গুরু কি করতাম এখন? গুরু বললেন: এখন তোলা শুরু কর। যতবার রাগবি, খালি পেরেক তুলবি। শিষ্য অনুগত। রাগে আর খালি পেরেক তোলে। তুলতে তুলতে কাহিল হয়ে পড়ল। গেল গুরুর কাছে। গুরু জিজ্ঞেস করলেন, কেমন লাগে? শিষ্য ক্লান্ত, বলে রাগ তো কমে না। গুরু বললেন: পেরেক তোলার পর কাঠটার দিকে তাকাইছো? কেমন দেখলা? হ, শিষ্য উত্তর দিল; খালি ছ্যদা আর ছ্যদা। গুরু হাসলেন, এখন থেকে রাগলে মনে রাইখো: যার উপর রাগতেছো, তার মনেও দাগ পড়ে। অই কাঠের মতোন। স্যরি বললেও সারে না। মনে রাইখো এইটা। যাও এখন, পেরেক তোলো।
৩.
এক জেনগুরুর কাছে, বিশজন সন্ন্যাসীর সাথে এক সন্ন্যাসীনিও ধ্যান করতো। তার নাম ছিলো ঈশাম। চুল কামানো এবং সাধাসিধে কাপড়ের পরও ঈশাম ছিলো দেখতে খুবই চমৎকার। সন্ন্যাসিরা অনেকেই তার প্রেমে পড়তো। গোপনে বলতে না পেরে, একজন চিঠি লিখলো। ঈশাম কোনো উত্তর দিলো না। পরে একবার গুরুর বক্তব্যের শেষে ঈশাম উঠে সামনে গেলো। যে তাকে চিঠি লিখেছিলো, তাকে উদ্দেশ্য করে বললো, তুমি যদি সত্যিই আমাকে ভালোবাসো, এসো, এখন আমাকে জড়িয়ে ধরো।
৪.
এক জেনগুরুর কাছে এক নতুন শিষ্য-
-গুরু, দয়া করে বলুন, আমি কীভাবে নিজেকে তৈরি করবো?
নিজেকে একটা ঘণ্টার মতোন ভাবো। যখন আস্তে আঘাত হবে, তখন মৃদু শব্দ হবে, আর যখন খুব জোরে আঘাত হবে, তখন শব্দ হবে খুব জোরে, বিকটভাবে।
৫.
একবার বানজান এক বাজার দিয়ে যাওয়ার সময়কার ঘটনা।
এক ক্রেতা কসাইকে বলছে- মাংশ ভালো দেখে দিও।
-আমার দোকানে সবই ভালো। একটুকরা মাংশও খারাপ নাই।
এই কথাগুলো শুনে বানজান দিব্যজ্ঞান লাভ করেন।
৬.
অনেক বছর আগে এক কৃষকের একমাত্র ঘোড়াটা হারিয়ে গেলো। পাড়াপ্রতিবেশী আসলো। সান্তনা দিলো- আহা, বেচারার কপালটাই খারাপ।
সম্ভবত -কৃষক উত্তর দিলেন।
পরদিন ঘোড়াটা তিনটা বন্যঘোড়া নিয়ে ফিরে আসলো। পাড়াপ্রতিবেশীরাও আসলো। পানে চুনা লাগাতে লাগাতে মেলা হাসলো- মিয়া, তোমারতো পুরা চানকপাল।
-সম্ভবত।
দুইদিন পরেই বুড়ার ছেলেটা ঘোড়ায় চড়তে গিয়া খোঁড়াতে খোঁড়াতে ঘরে ফিরলো। লোকজন পানের পিক ফেলতে ফেলতে আপসোস করলো, বুঝলা কপালে থাকতে হয়।
-সম্ভবত।
এর কয়দিন পরেই আর্মির লোক এসে গ্রামের সব জোয়ান ছেলেপিলেরে যুদ্ধের জন্য নিয়া গেলো। বুড়ার খোঁড়া ছেলেটাই পাড়ায় রইলো। বুড়াবুড়ি এসে দেখে গেলো। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো, এইডারেই বলে কপাল।
-সম্ভবত।
নান-ইন নামের এক গুরুর কাছে একবার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসলেন জেন-চিন্তা বিষয়ে কিছু জানার জন্য। নান-ইন তাকে নিয়ে চা খেতে বসলেন। অধ্যাপক দেখলেন, চা দিতে গিয়ে নান ঢালছেন তো ঢালছেনই। চা কাপ উপচে যখন নীচেও গড়িয়ে পড়লো, অধ্যাপক বাঁধা দিলেন ঢালতে। নান হাসলেন, অধ্যাপক আপনিও কাপের মতো ভরে আছেন। শুন্য হয়ে আসেন।
৭.
এক অন্ধ লোক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গেছেন, রাতে। ফেরার সময় বন্ধু তারে একটা হারিকেন দিল, বাঁশ আর কাগজের বানানো। অন্ধ বলল: আমি তো এমনিতে আন্ধা। হারিকেন দিয়া কি করব? বন্ধু বলল: আরে এটাতো তোমার জন্য না। আর যারা হাঁটে তাদের জন্য। তোমারে যাতে দ্যাখে। তো অন্ধ রওনা দিল হারিকেন নিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ, এক লোক গায়ে এসে পড়ে প্রায়, অন্ধ বলে: কি মিয়া কিচ্ছু দেখেন না চোখে? হারিকেন জ্বলতেছে না? লোকটা অবাক : হারিকেন? কই না তো! আপনার হারিকেন তো মেলা আগে জ্বইল্যা গ্যাছে !!
৮.
একবার দাইজু চীনে গিয়েছিলেন গুরু বাসুর সাথে দেখা করতে।
দেখে বাসু জিজ্ঞেস করলেন- কী, কিছু খুঁজছো?
-গুরু, আমি আসলে দিব্যলাভ করতে চাই।
-দিব্যলাভ? তো এইখানে কেনো? তোমার ঘরে যাও।
-ঘরে? ঘর কোথায়?
– সে তুমি আমার কাছে জানতে চাচ্ছো?
পরে দাইজু যখন দিব্যলাভ করেন, তিনিও সবাইকে বলতেন- নিজের ঘরেই যাও, আর কাজে লাগাও।
৯.
এক দার্শনিক বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করলন, শব্দ এবং শব্দ ছাড়া আমরা কীভাবে সত্যকে জানতে পারি?
বুদ্ধ নিরুত্তর। কিছুই বললেন না।
দার্শনিক খুশি হলেন। মাথা নিচু করে বুদ্ধকে প্রণাম করে বললেন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমার আর কোনো দ্বিধা নাই। আমি আমার পথ পেয়ে গেছি।
যখন দার্শনিক চলে গেলেন, আনন্দ বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করলেন: উনি কী পেলেন এতে?
বুদ্ধ হাসলেন। বললেন, একটা ভালো ঘোড়া সবসময় চাবুকের ছায়া দেখেই দৌঁড়ায়।
১০.
টোকিওতে এক সময় দুই অধ্যাপক ছিলেন পুরা উল্টা স্বভাবের। উনশো নামের যিনি, তিনি বুদ্ধ-চিন্তার অনুসারী। মাদকজাতীয় কিছু ছুঁয়েও দেখতেন না। এমন কি, সকাল ১১টার পরও কিছুই খেতেন না। অন্যজন তানজান, বুদ্ধ-নীতিকথার ধারও ধারতেন না। যা ইচ্ছা খেতেন, যখন ইচ্ছা ঘুমাতেন।
একবার তানজান যখন বেশ গলা ডুবিয়ে মদ খাচ্ছিলেন, উনশো যাচ্ছিলেন পাশ দিয়ে।
ডাক দিলেন তানজান, কী চলবে নাকি এক প্যাক?
-না, অভ্যাস নাই। উনশো বেশ গম্ভীর।
-মদই খাও না? তুমিতো দেখি মানুষই না।
উনশো রেগেমেগে অস্থির। মানুষই না! তবে কী?
-বুদ্ধ!
১১.
এক জেনস্কুলে চার ছাত্র ঠিক করলো, তারা তাদের ধ্যানের সুবিধার জন্য এখন থেকে নীরবতার অভ্যাস করবে। তারা সাতদিন সময় নিলো এই জন্য। প্রথমদিন দিনের বেলাটা তারা ভালোভাবেই পার করলো, রাতের বেলায় হারিকেনটা যখন নিভে নিভে, একজন খুব বিরক্ত হলো, জ্বালাইছে কে এটা?
আরেকজন অবাক, কীরে আমাদের না কথা না বলার কথা?
তোরা দুইটাই বলদ। যা, চুপ যা। তৃতীয়জন থামায় দিল ওদের।
এইবার চতুর্থজন মুখ খুললো- হা হা হা। শুধু আমিই কুনো কথা বলি নাই।
১২.
দীর্ঘদিন সাধনা করতেছে এরকম এক শিষ্যকে গুরু সবার সাথে পরিচয় করায় দিলেন একদিন। বললেন, আনন্দের বিষয়, আমরা এমন একজনরে পাইলাম, যে বৌদ্ধত্ব লাভ করেছে। বলার সাথে সাথে বাকিরা এসে তারে ঘিরে ধরল। সবারই খুব কৌতুহল, কেমন লাগতেছে তার।
সে উত্তর দিল: জঘন্য।
১৩.
যোশুর কাছে একবার এক নতুন শিষ্য আসলেন।
-গুরু, আমি নতুন আসলাম। আমার জেন নিয়ে জানার খুব ইচ্ছা। কিছু বলুন।
খাওয়া-দাওয়া হয়েছে?
-হ্যাঁ, মাত্র খেলাম।
তাহলে যাও, গিয়ে প্লেটটা ধুয়ে ফেলো।
এক জেনগুরুর কাছে, বিশজন সন্ন্যাসীর সাথে এক সন্ন্যাসীনিও ধ্যান করতো। তার নাম ছিলো ঈশাম। চুল কামানো এবং সাধাসিধে কাপড়ের পরও ঈশাম ছিলো দেখতে খুবই চমৎকার। সন্ন্যাসিরা অনেকেই তার প্রেমে পড়তো। গোপনে বলতে না পেরে, একজন চিঠি লিখলো। ঈশাম কোনো উত্তর দিলো না। পরে একবার গুরুর বক্তব্যের শেষে ঈশাম উঠে সামনে গেলো। যে তাকে চিঠি লিখেছিলো, তাকে উদ্দেশ্য করে বললো, তুমি যদি সত্যিই আমাকে ভালোবাসো, এসো, এখন আমাকে জড়িয়ে ধরো।
১৪.
একবার নবুসিগে নামের এক সৈন্য আসে হেকুইনের কাছে। জিজ্ঞেস করে, এইখানে নাকি সত্যি সত্যি স্বর্গ-নরক আছে?
তুমি কে? হেকুইনের প্রশ্ন।
-আমি সৈন্য।
সৈন্য? কিন্তু তোমারে দেখতে তো ভিখারীর মতোন লাগে। তুমি আবার কী করবা? হেকুইনের মুখে বিদ্রুপ।
শুনে সৈন্যটা এতো ক্ষেপল, তার হাত তলোয়ারে চলে গেলো।
দেখে হাসলো হেকুইন, এইতো খুলে গেলো দোজখ।
সাথে সাথে তলোয়ার পুরে ফেললো সৈন্যটা।
-আর, স্বর্গের শুরু এই এখান থেকে।
১৫.
বাঙ্কেই’র কাছে এক শিষ্য আসল।
-গুরু, আমি খুবই বদরাগী। এখন রাগ কমানোর জন্য কী করতে পারি?
দেখি, কী রকম রাগো।
-কিন্তু এই মুহুর্তে তো আর রাগতে পারবো না!
কখন পারবা?
-হঠাৎ করে রাগি। নিজেও বুঝি না।
-দেখাইতে যখন পারো নাই, তাইলে সমস্যা নাই। সমস্যা থাকলে দেখাইতে পারতা। এটা তোমার জন্ম থেকে ছিলো না। তোমার মা-বাপও দেয় নাই। যাও এইটাই মনে রাইখো।
১৬.
একবার এক ঘোর বর্ষায় তানজান আর ইকিদু এক কাঁচা রাস্তা ধরে যাচ্ছিলো। দেখলো, কিমানো পড়া, বেশ পরিপাটি এক মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে মোড়ে, পার হতে পারছে না। তানজান গেলো তার কাছে। এসো বলে তার হাত ধরে কাদাটা পার করে দিলো। ইদিকু কিছুই বলল না। কিন্তু মন্দিরে পৌঁছার পর সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না, আমরা ভিক্ষুদের শুধু সুন্দরী না, কোনো মাইয়ামাইনষের কাছেই যাওয়া মানা। পাপ। এইটা জানো না?
হুম জানিতো। তানজান বললো, এই জন্যইতো অই মাইয়ারে আমি রাস্তায় থুইয়া আইছি। আর তুমি তারে ঘরে নিয়া আসলা?
১৭.
নান-ইন নামের এক গুরুর কাছে একবার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসলেন জেন-চিন্তা বিষয়ে কিছু জানার জন্য। নান-ইন তাকে নিয়ে চা খেতে বসলেন। অধ্যাপক দেখলেন, চা দিতে গিয়ে নান ঢালছেন তো ঢালছেনই। চা কাপ উপচে যখন নীচেও গড়িয়ে পড়লো, অধ্যাপক বাধা দিলেন ঢালতে। নান হাসলেন, অধ্যাপক আপনিও কাপের মতো ভরে আছেন। শুন্য হয়ে আসেন।
১৮.
এক কৃষক এতোই বুড়ো হয়ে গিয়েছিলেন যে ক্ষেতে আর কাজ করতে পারতেন না। তাই সারাদিন ঘরের বারান্দায় বসে থাকতেন। দিনের পর দিন। বাপকে এভাবে বসে থাকতে দেখতে দেখতে ছেলেও খুব বিরক্ত। তাই সে বাপের জন্য একটা ভালো দেখে কফিন বানালো। কফিনটা বারান্দায় এনে বাপকে বললো তাতে ঢুকে যেতে। বাপও বিনা আপত্তিতে ঢুকে গেলেন। এরপর কফিনের মুখটা আটকে দিলো। ক্ষেতের পাশে যে উচুঁ পাহাড়ের মতো ছিলো, ছেলে কফিনটা অইখানে নিয়ে আসলো। ফেলতে যাবে এই সময় শুনলো, কফিনের দরজায় ঠুকঠুক শব্দ হচ্ছে। সে কফিনের মুখটা খুললো। দেখলো, বাপ বেশ আরাম করেই শুয়ে আছে। তাকে বলছে, ফেলার আগে তুরে একটা কথা বলি, হুনবি?
-কী? ছেলে মুখে বিরক্তি।
-তুই আমারে যেইভাবে ইচ্ছা অইভাবে পাহাড় থাইকা ফেলিস। সমস্যা নাই। তয় এই কফিনের কাঠগুলা মনে হয় ভালা। রাইখ্যা দিস। তোর পোলাগো কাজে আসবো।
১৯.
একবার এক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধসম্রাট ধর্ম নিয়ে জানার জন্য এক জেনগুরুকে তার প্রাসাদে ডাকলেন।
জিজ্ঞেস করলেন, পবিত্র বৌদ্ধমতে সবচে’ বড়ো সত্য কী?
-অন্তহীন শূন্যতা… আর পবিত্র বলতে বোধ হয় কিছুই নেই।
পবিত্র বলতে কিছু নাই তো তুমি কে?
-জানি না।
২০.
এক সুপরিচিত দার্শনিক এবং পণ্ডিত দীর্ঘদিন ধরে জেন চর্চা করে আসছিলেন। অনেক বছর পরে, অনেক ধৈর্য শেষে, যেদিন তিনি সার্থক হলেন, সেদিন তিনি তার সব বইপত্র উঠানে নিয়ে গেলেন। তারপর আগুন ধরিয়ে দিলেন।
২১.
জাওজেকে তার শিষ্য জিজ্ঞেস করলো: গুরু স্বর্গে যাবেন নাকি নরকে?
নরকেই তো আছি। জাওজে উত্তর দিল।
নরকে গেলেন কেনো? শিষ্য অবাক।
জাওজে বিরক্ত: আরে নরকে না গেলে তোদের শিখাইতো কে!!
২২.
সুজান নামের এক চীনা জেনগুরুকে তার ছাত্র জিজ্ঞেস করলো,
-উস্তাদ, এই দুইন্যার সবচে’ দামি জিনিস কী?
-মরা বিলাইর মাথা।
-মরা বিলাইর মাথা! ছাত্র অবাক। ক্যান?
-কারণ, এই জিনিসের দাম এহনো ঠিক অয় নাই।
২৩.
এক পাহাড়ের নীচে রোকান নামে জেন গুরু থাকতেন। খুব সাধারণ, সহজ সরল জীবন যাপন করতেন তিনি।
একবার এক চোর ঢুকলো তার ঘরে। কিন্তু কিছুই পেল না। উল্টো ধরা পড়ে গেলো রোকানের হাতে। রোকন তাকে এনে বসাল। বললো, আহা! কতো কষ্ট করে আসলা কিছুইতো পেলা না! রোকানের খুব আফসোস। আচ্ছা নাও, আমার এই কাপড়খানাই নিয়া যাও। বলে তার পরনের কাপড় খুলে চোরকে দিয়ে দিলো। চোরতো অবাক। তারতো বিশ্বাসই হয়না। রোকানও না দিয়ে ছাড়ে না। শেষে চোর কাপড় নিয়ে চলে গেলো। নগ্ন রোকান গিয়ে বসলো উঠোনে। ধবধবে জোসনা। বিশাল চাঁদ। রোকান তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলেন, আহা! লোকটারে যদি এই চাঁদটা দিতে পারতাম !!