পাখির কাছে আজো তো বিফল সব আকাশবিজ্ঞান
ত্রিস্তান
১.
শীতের সাময়িক বেশে তোমার জীবন যেন
প্লাস্টিক ফুলের বাগান
যেখানে প্রতিদিন সেল্ফিরা হেসে ওঠে খুব—তারপরও
কুয়াশা জানে দ্বিধার পরিণতি শেষে
বিচ্ছিন্নতা এক ‘নিজস্ব নদীর নাম!’
২.
রাত্রির দেয়ালে ঝুলে থাকে খঞ্জর
আয়না-বিহীন ঘর,
পাথরেরও মন থাকে জলের অতলে—
ভুলে যাই ‘ফেরা-পথ’
মুখোশে মুখোশে
ব্যক্তিগত অন্ধকারে আমরা পরস্পর!
৩.
প্রমাণ সাপেক্ষ অংকের সামনে ঝরে যাচ্ছে
অজস্র না-ফোটা ফুল—ঘোরগ্রস্ত সময়ে
ঢুকে যাই একটা শান্ত জলাশয়ে।
শহরে তখন বিদ্রূপ, অন্ধকার গিলে খাচ্ছে
আগলিয়ে রাখা মাস্তুল—
অচেনা টিউলিপ
মুখস্থ রঙ থেকে যত দূরে চোখ যায়
তুমি যেন দাঁড়িয়ে থাকো অচেনা টিউলিপ!
পথের ওপর শুয়ে থাকা পাতাদের ঘুম—
বেজে যায় সমস্ত বিকেল যাপনে।
একটা পাখির কাছে আজো তো বিফল সব
আকাশবিজ্ঞান—মানুষ যেখানে পায়
একাকী নীলের ভেতর হারিয়ে যাওয়া মুখ
নিজস্ব বনের ক্রন্দনে!
যাপন
এই যে আশ্চর্য অন্ধকারে
একে একে কেটে যাচ্ছে দৃশ্য—
কোনো এক বননীল
রৌদ্রের কথা ভেবে ভেবে
এখানে জীবনায়ন এখনও এমনই হয়ে থাকে।
কুয়াশানদীর বুকে ঘুমফুল
কিছু না-করার মতো হিমস্রোতে
ভেসে যায়
রাতরুপালি আলোর জোয়ারে—
আর এই যে অন্ধকারে মিশে থাকা আয়ু
ক্রমশ ধুয়ে যায় দীর্ঘ একার পথে
সমাহিত জলে…
ট্রমা
জ্বরের স্বভাবে নেমে আসে হাইপার স্পেস-
শহরের সবচেয়ে বিবশ বারান্দাটার কোণে
যেখান থেকে সামনে তাকালেই ফুটে ওঠে
মানুষের চলে যাওয়া…
এইখানে থেমে থাকে ট্রমা-
শ্বাসেদের কেটে যাওয়ার অনেক গোপনে…
সমাধি
এ ঘর থেকে ও ঘরে যাচ্ছি
ডাইনিং স্পেস, রান্নাঘর এমনকি বারান্দা-
কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ‘ভালোলাগা’।
কোথাও স্থিরতা নেই, স্পর্শ নেই-
যেন মৃত জবাফুল পড়ে আছে উঠানময়
পায়ের তলায় ভেঙে যাচ্ছে শুকনো পাতা-
জানালার এ-পাশ আর ও-পাশ কোথাও আকাশ নেই।
আমার হৃদয়ে লেগে আছে অনিদ্রা।
ঘর থেকে ঘরে তাই কেবলই অন্ধকার-
ছোপ ছোপ ছোপ
তোমরা কেউ কখনও জানবে না
বিবশতা এমন হতে পারে!