মৃত্যুর গ্রাফিতি
মুহূর্ত
সাহানা, একটা ম্যাজিক দেখবে?
কী ম্যাজিক?
দেখো শুক্লা দ্বাদশীর চাঁদটা কেমন নদী হয়ে গেল!
মৃত্যুর গ্রাফিতি-১
আমিতো মরে গেছি সেই কবে! জন্মের একমুহূর্ত আগে
আমার মুখ কেউ দেখার আগে মলিন গ্রাফিতি আঁকা প্রাচীন কোনো গুহায় আমি মরে গেছি।
তারপর মায়েদের সুস্বাদু স্নেহে বড় হয়েছে আমার মৃতদেহ
পৃথিবীর আলো পেয়েছে বাতাস পেয়েছে, নদীর ঢেউ আর প্রেমিকাদের স্তন আর নিতম্বের অধিকার পেয়েছে
একপৃষ্ঠা কাগজের ওপর ভূগোলের ছবি আঁকার সময়- সেও পেয়েছে।
কিন্তু আমি? আমি তো মরে গেছি সেই কবে! সেই কবে!
মৃত্যুর গ্রাফিতি-২
যখন আমার চোখে পৃথিবীর আলো পড়েনি আর মাকড়শার গায়ে ছিলো শঙ্কার জাল
যখন তক্ষকের লাল-নীল দিপাবলি হাসছিলো, কাঁপছিল গাছ আর ঢাল,
তখন একজন মা সন্তানের জন্য রক্ত বিসর্জন দিচ্ছিলেন
আর
একজন বাবা মেঘদেবতার মুখ চেয়ে উত্তরপুরুষের মুখ খুঁজছিলেন।
মেঘদেবতা? সে তো একজনই হয়
তবে আমি? ‘আমি’ তো মেঘদেবতা নয়!
পয়গাম
রাত তো এই শেষ হলো শিরিন
আর কতক্ষণ তুমি বিরহের তাহাজ্জত পড়বে?
মাথায় লাজের ঘোমটা টেনে আর কতক্ষণ ওভাবে বসে থাকবে?
এদিকে দেখো আমায়
অধৈর্যের হেচকা টানে অপেক্ষার বাঁধ ভেঙে যায়।
গিলাফ খুলে ফেলো শিরিন
তোমায় চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত নিবিঢ় তেলাওয়াত করি
তুমি কলব দিয়ে শোনো সেই সঙ্কেত।
এসো, কামনা কবুলে ঠোঁটে ঠোঁটে চুমু খাই
মানবিক জমজমে অযু সেরে পরস্পর পাক হই।
এযাযত দেবে কি শিরিন?
দেখো, প্রেমাঙ্কিত মোহরের থলি আছে
আর এ দুই কালো মশকে আছে মায়ার নহর
তুমি যদি চাও তবে করতে পারো গনিমত
আমাকে সহজ; খুব সহজ।
মিডনাইট চিলড্রেন
মধ্যরাতের শিশুরা, তোমরা জেগে আছো আগ্রার জংধরা রেল লাইন, বিভক্ত রোডের ধূসরতা কিংবা ভাঙা তাজমহলের স্মৃতিতে?
তবে এসো সিনাই, যাপিত জীবনের গল্প করি- আমার, তোমার, আমাদের।
ওয়ারিশ ফেলে রেখে আমি কি করে তাকাব সূর্যোদয়ে, সূর্যাস্তে কিংবা দ্বিপ্রহরে?
পালাবার আর কোনো পথ নেই, তাড়না নেই চুপ থাকার, চেপে রাখা মুশকিল বটে যা জেনেছি
তবে এসো গল্প করি তোমার, আমার, তোমাদের।