:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
মীর রবি

কবি

শহর প্রদক্ষিণের পর সিদ্ধান্ত নিয়ো—তোমার কেবলা কোন দিক
প্রচ্ছদ: নির্ঝর নৈঃশব্দ্য

'ক্রস মার্কার' থেকে কবিতা

শহর প্রদক্ষিণের পর সিদ্ধান্ত নিয়ো—তোমার কেবলা কোন দিক

ট্রাফিক সিগন্যাল

ট্রাফিকের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাইওয়ের ভেতর চলে গেছে আরো এক মৃত্যুমৃত্যুর রঙ ছোটবেলার লালগাড়ির মতন। শখ ছিল লালগাড়ি চড়বেরাস্তার মোড়ে দাঁড়ানো পুলিশ ভুলে গেছে শৈশবযার লালগাড়িতে কোনো ক্রস চিহ্ন ছিল না।

ওরা প্রত্যেকে ক্রস হয়ে গেছে ট্রাফিকের ভেতর, এখন লালগাড়ি নেইলাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মতো ভরে উঠছে কবর।

 

ক্রিসমাস

ক্রিসমাসে ব্যাপ্টিস্ট চার্চে গেলে দেখতে পাবে একটা কালো মুখক্যালিফোর্নিয়ার সাদা চামড়া ঢেকে দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন। মাছরাঙার মতো তীক্ষ্ণ প্রতীক্ষার চোখলি গোমেজ, শতবর্ষী দেবদারুর পাতায় কান্না মুছছে।

অপেক্ষা করলে মানুষ যেমন হয়যা হওয়ার কথা, তার থেকেও বেশি অভিমানী মনে হবে তাকে। ক্রিসমাস প্রার্থনার শেষ পর্যন্ত, কুয়াশার চাদরে উত্তরের রাত গভীরে গেলে লি চলে যাবে নিঃসঙ্গ পার্কেযেখানে নগ্ন যিশুরা ঘুমায় শোক উদ্যাপনে চুমুর প্রার্থনা করে।

সান্তাক্লজ দুঃখ নিবেন এই ভেবেবাইবেলের কোথাও লেখা নেইকেউ দুঃখ পাক। আর আমি জানালার পর্দা টানিয়ে শুয়ে পড়ব, স্বপ্ন হয়ে ঘুরবে অসমাপ্ত দাম্পত্যের দিন।

 

ক্যালকুলেশন

মৃত্যুর পর অদৃশ্য শহরআগলে রেখো জন্মের ভেতর। জাদুবাক্সে পুতুলের চোখ উপড়িয়ে কশরত করোনাগরিক বাউল। বাবরি গন্ধে-দ্বন্দ্বে ছন্দে ট্রিগারের ক্ষমতা ফুরিয়ে গেলে ডেকোভূতের গলির শেষ মাথায় ভুতুল বসিয়ে দিবনজর যেন না লাগে।

সমস্ত শহর প্রদক্ষিণের পর সিদ্ধান্ত নিয়োতোমার কেবলা কোন দিক। সোবেহ সাদিকের পবিত্র ছায়ায় মাজার রোডের মেয়ে-ধর্ষিত হও আর ধর্ষকের কেবলায় সিজদা দাওদ্বিখণ্ডের ভয়ে। দ্বিখণ্ডিতই হলেছিলাম না বলে।

বরং এ শহর ছেড়ে চলে যাইত্রাসের ভিড়ে ভাঙারে জমা থাক বন্দুক ও আয়না। আয়নার ভেতর তোমার মুখবাঁদুর ঝোলানো টিপচাঁদের বুকে এঁকো করপোরেট বৃষ্টি।

 

বুক ক্যাফে

ওরা বই পড়ে, কেউ প্রেমে পড়েচায়ের কাপে চুমু দিয়ে পড়াপড়ি হয়। ওটা পড়ার ঘরচাউমিন সরলতায় বেঁধে যায় কাঁটাচামচ, পাস্তার বাটিতে পস্তায় নগর বালক। কফি মগে বাষ্প দেখে নেশা ওঠে সিগারেটে, ঠোঁটে ঠোঁটে কার পার্কপার্কিং প্লেস, রোদ ঝাপটায় দারুণ দিনে।

কবি আসে, পাঠক আসে, প্রেমিকা আসেপাঠ করে বুকের লোম। পনেরো টাকার মামে তৃষ্ণা ফুরায়, পিপাসায় কাতরায় কবিতাযুগল। যুগ যায় যুগ আসেযোগ হয় পৃষ্ঠা। ফাঁকফোকরে শূন্যতা বসে, অন্ধকার নামেএনার্জি ফুরিয়ে শার্টার ঝুলে যায় দৈনন্দিন শপে।

 

পোস্ট অফিস

পরিত্যক্ত ডাকবাক্সে কলার খোসা ঢুকিয়ে ভাবিএটা কোনো ছাগলের খামারে চলে যাবে। এরও আগে পিঁপড়ে পেয়েছে টেরএখানে জীবন আছে।

ডাকবাক্সের মতো পরিত্যক্ত পোস্ট অফিসচশমাপরা আশি বছরের বুড়ো, ভাঙা সাইকেল চেপে পোস্ট মাস্টার, রানারের পিঠে ঝোলে বৃটিশ পিরিয়ড, মাস মাইনে।

পোস্ট অফিসের ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়েইসাবেলার চিঠি। হলুদ খামব্যর্থ বীর্যের মেয়ে, পিয়নের চাকরি, ব্যবসা করা স্বামী, পুরোনো দিনের স্মৃতিডাকবাক্সের মতো মলিন।

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.