:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
সজীব সেন

দৃশ্য শিল্পী ও লেখক

শিল্পের জগতে সংকীর্ণতার প্রতিবাদ ও একদল ছদ্মবেশী
Image Source: guerrillagirls.com

গেরিলা গার্লস

শিল্পের জগতে সংকীর্ণতার প্রতিবাদ ও একদল ছদ্মবেশী

কেমন লাগবে, যখন শুনবেন নারীবাদী শিল্পী ফ্রিদা কাহলো (Frida Kahlo) ও ক্যাথে কোলভিজ (Käthe Kollwitz)-এর নামকে ছদ্মনাম হিসেবে নিয়ে একদল নারী শিল্পী সংঘবদ্ধ হয়ে শিল্পচর্চা করছে এবং জনসম্মুখে পরে থাকছে গরিলা মুখোশ। আর যদি শোনেন, তারা নিজেদের নারীবাদী শিল্পী ঘোষণা করে, ইন্টারসেকশনাল নারীবাদে বিশ্বাস রেখে শিল্পের জগতে বর্ণ বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য, কিংবা সমাজের শ্রেণি ভেদাভেদ ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াশীল উপস্থাপনা অব্যাহত রেখেছে। হ্যাঁ এই প্রতিক্রিয়াশীল চর্চা দু-এক বছরের গল্প নয়, চলছে ৩৫ বছর যাবৎ একটানা। যা কোন গালগপ্প নয়। এই কৌতুহল উদ্দীপক নারীবাদী দলটির নাম Guerrilla Girls (গেরিলা গার্লস)। এই দলটির গঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ জানা না গেলেও এতটুকু নিশ্চিত যে ১৯৮৫ সালের বসন্তের মে মাসে তারা যাত্রা শুরু করে।

১৯৮০-র দশকে শিল্পের জগতে আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটি কেন্দ্রীক শিল্পকর্মের উপস্থাপন ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যে পক্ষপাতিত্ব, অনিয়ম, বর্ণ বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য তারই প্রতিবাদে মূলত গেরিলা গার্লসের সৃষ্টি। ৮০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে নিউইর্য়কের প্রতিবেশী লোয়ার ইস্ট সাইডে অবস্থিত ‘অব্রন্স আর্টস সেন্টার’ (Abrons Arts Center)-এর দেয়ালে, ইস্ট ভিলেজের আশেপাশে, ম্যনহাটনের শহরতলি সোহো-তে গেরিলা গার্লসের বেশকিছু পোস্টার দেখা যায়। কিছু পোস্টারের শিরোনাম ছিল What Do These Artist Have in Common?, Guerrilla Girls’ 1986 Report Card, Guerrilla Girls Hits List, These Galleries Show No More Than 10% Women Artists or None At All, These Critics Don’t Write Enough About Women Artists। এই পোস্টারগুলোর বিষয়বস্তুর দিকে দেখলেই বোঝা যায় সেই সময়ে নিউইয়র্ক সিটির শিল্প জগতের অনিয়মের সার্বিক রূপ। দেখা যায় এমন অনেক বেসরকারি গ্যালারি আছে যারা কখনো কোন নারী শিল্পীর প্রদর্শনী করে নাই, আর কিছু গ্যালারি প্রদর্শনী করে থাকলেও তা মাত্র ১০ শতাংশ। এমনকি ১৯৭৯ হতে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত শিল্প সম্পর্কিত আর্টিকেল ও রিভিউতে ২০ শতাংশেরও কম নারী শিল্পীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে। এমনও অনেক শিল্প সমালোচক ছিলেন যারা কখনোই নারী শিল্পী ও শিল্পকর্ম নিয়ে লেখেন নাই। অপরদিকে বিংশ শতাব্দিতে সমসাময়িক শিল্পকলার জয়জয়কার সময়ে বিখ্যাত প্রাইভেট ও পাবলিক গ্যালারি বা মিউজিয়ামে নারী শিল্পী এবং নারী কিউরেটরের প্রতিনিধিত্ব ছিল না। অধিকাংশ গ্যালারি সমাজের তথাকথিত উচ্চবর্ণীয় ধনীদের টাকায় চলছিল। তাই তাদের ইচ্ছায় এবং পক্ষপাতিত্বে গ্যালারিগুলো শুধুমাত্র শ্বেতাঙ্গ শিল্পীদের শিল্পকর্মের প্রদর্শন ও ডকুমেন্টেশন করত। এমনকি দ্যা ম্যাট (দ্যা মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট)-এর পরিচালনা পরিষদ ছিল সম্পূর্ণভাবে পুরুষ নিয়ন্ত্রিত। অথচ নিউইয়র্কে তখন প্রচুর নারী শিল্পী।

Poster: Naked Music Video, 2014. Image Source: guerrillagirls.com

গেরিলা গার্লস’র সম্পর্কে বলতে গেলে যে প্রদর্শনীটি সামনে চলে আসে তা হল, ১৯৮৪ সালে অনুষ্ঠিত ‘অ্যান ইন্টারন্যাশনাল সার্ভে অব রিসেন্ট পেইন্টিং অ্যান্ড স্কাল্পচার’ প্রদর্শনীটি। কিউরেটিং করেন কিনস্টাইন ম্যকশাইন (Kynaston McShine)। প্রদর্শনীটি মোমা (মিউজিয়াম অব মডার্ণ আর্ট)-এ অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শনীতে ১৬৫ জন শিল্পীর মধ্যে নারী শিল্পী মাত্র ১৩ জন। আর এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে মোমা বলতে চাইল, তারা সে যুগের সতেরটি দেশ (অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, গ্রেট ব্রিটেন, ইন্ডিয়া, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ইউনাইটেড স্টেট এবং ওয়েস্ট জার্মানি)-এর সক্রিয়, প্রতিভাবান এবং গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচিত চিত্রশিল্পী ও ভাস্করদের তুলে এনেছে। যেখানে হাতে গোনা কয়েকজন নির্বাচিত কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পী থাকলেও কোন কৃষ্ণাঙ্গ নারী শিল্পী ছিল না। তবে সে সময়ে কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীরা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি শিল্পচর্চা করতেন এবং বিখ্যাতও হয়েছিলেন। তাই গেরিলা গার্লসের ভাষায়, ‘প্রর্দশনীটি শুধু নারী-পুরুষের বৈষম্য নয়, বর্ণ বৈষম্য দ্বারাও আক্রান্ত’। প্রর্দশনীর কিউরেটরের কথাবার্তা আরো বিতর্ক সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ‘যারা এই প্রর্দশনীতে অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি তাদের শিল্পী হিসেবে কোন ভবিষ্যৎ নাই’। এর প্রতিক্রিয়ায় বেশ কিছু শিল্পী গ্যালারির সামনে প্রতিবাদ করেন। আর এই প্রতিবাদকারীদের মধ্য থেকেই গেরিলা গার্লস-এর জন্ম।

১৯৮০-র দশকে শিল্পের জগতে আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটি কেন্দ্রীক শিল্পকর্মের উপস্থাপন ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যে পক্ষপাতিত্ব, অনিয়ম, বর্ণ বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য তারই প্রতিবাদে মূলত গেরিলা গার্লসের সৃষ্টি। ৮০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে নিউইর্য়কের প্রতিবেশী লোয়ার ইস্ট সাইডে অবস্থিত ‘অব্রন্স আর্টস সেন্টার’ (Abrons Arts Center)-এর দেয়ালে, ইস্ট ভিলেজের আশেপাশে, ম্যনহাটনের শহরতলি সোহো-তে গেরিলা গার্লসের বেশকিছু পোস্টার দেখা যায়।

প্রথম দিকে গেরিলা গার্লস নিউইয়র্কে ‘দ্যা ম্যাট’-এর মত বিভিন্ন বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ও গ্যালারিতে গিয়ে তাদের সংগৃহীত শিল্পকর্মের সংখ্যা-বিষয় বিবেচনায় কতজন নারী শিল্পীর ও কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীর শিল্পকর্ম আছে তা বের করে। আর এই কাজকে তারা ‘Weenie Counts’ নাম দেয়। সে সময় প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে গেরিলা গার্লস বেশ কিছু পোস্টার ছাপায়। যার মধ্যে একটি পোস্টার হল ‘Do Women have to be naked to get into the Met. Museum?’ (১৯৮৯)। পোস্টারটিতে বলা হয় দ্যা ম্যাট-এর পাবলিক কালেকশনে আধুনিক শিল্পকর্ম বিভাগে যে সব শিল্পকর্ম ছিল তার মধ্যে নারী শিল্পীদের শিল্পকর্ম পাঁচ শতাংশেরও কম, আর পঁচাশি শতাংশ শিল্পকর্মে নারীকে দেখানো হয়েছে নগ্ন হিসেবে। একই পোস্টারটি আরো কয়েকবার নতুন নতুন তথ্য সহ ২০০৫ ও ২০১২ সালে অবার প্রকাশিত হয়। সাথে সাথে অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করেও তারা পোস্টার ছাপাতে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পোষ্টার Bus companies are more enlightened than NYC Galleries (১৯৮৯, ২০১৪), At last! Museums will no longer discriminate against women and minority artists (১৯৮৮), The Advantages of Being a Woman Artist (১৯৮৮), These are the most bigoted galleries in New York (১৯৯১), Traditional Values and Quality Return to the Whitey Museum (১৯৯৫), NYC Recount (১৯৯৫)।

Poster: Birth of Feminism, 2007. Image Source: guerrillagirls.com

সময়ের সাথে সাথে গেরিলা গার্লস তাদের কাজের বিষয়বস্তু, মাধ্যম ও পরিসর বাড়ায়। তারা নিউইয়র্কের বাইরে লস অ্যাঞ্জেলেস, মিনিয়াপলিস, মেক্সিকো সিটি, ইস্তাম্বুল, লন্ডন, বিলবাও, রোটারডাম ও সাঙ্গাইয়েও কাজ আরম্ভ করে। প্রথম দিকে তারা চিত্রকলা, ভাস্কর্যের গ্যালারি-মিউজিয়ামকে লক্ষ্য করে কাজ শুরু করলেও পর্যায়ক্রমে বিজ্ঞাপন, সিনেমা, রাজনীতিসহ জনপ্রিয় পপ সংস্কৃতি নিয়েও কাজ করতে থাকে। তারা সিনেমা জগৎ ও রাজনীতিকে কটাক্ষ করে বেশ কিছু পোস্টার ছাপায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য What’s the difference between a prisoner of war and a homeless person? (পোস্টার, ১৯৯১), The Anatomically Correct Oscar Billboard (বিলবোর্ড, ২০০২, ২০১৬), Even the U.S Senate is More Progressive than Hollywood (বিলবোর্ড, ২০০৩, ২০১৬)। পাশাপাশি তারা বিভিন্ন শিল্পী-দর্শক, গৃহহীন মানুষ, ম্যাগাজিন ইত্যাদির সাথে ইন্টারেক্টিভ প্রজেক্টও পরিচালনা করে। যেমন, Hidden Agender/Passing the Buck (প্যানেল ডিসকাশন, ১৯৮৬), I can survive on the street (পোস্টার, শিল্পী ও গৃহহীনদের অংশগ্রহণমূলক প্রজেক্ট, ১৯৯১), How to Enjoy the Battle of the Sexes (দ্যা নিউইর্য়কার ম্যাগাজিনের জন্য প্রজেক্ট, ১৯৯৬), Horror on the National Mall (ওয়াশিংটন ডিসি-এর প্রচারণার জন্য প্রজেক্ট, ২০০৭), If You keep Women away, They Get Resentful (দর্শকদের অংশগ্রহণমূলক প্রজেক্ট, আর্ট বাসেল, হংকং, ২০১৮)।

গেরিলা গার্লসের বেশ কিছু ভিডিও-প্রজেকশনও বেশ আলোচিত। তেমন একটি ভিডিও হল ‘One is Not Enough’। এটি ২০১৭ সালে ‘ভ্যান গঘ মিউজিয়াম’ আয়োজিত ‘দ্যা ডাচ ইন প্যারিস ১৭৮৯-১৯১৪’ প্রদর্শনীর সমালোচনা করে তৈরি। ১৭৮৯ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত প্যারিসে আসা ১১৩৫ জন ডাচ শিল্পীর মধ্যে নারী শিল্পী ছিলেন ৬৮ জন। কিন্তু প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত হয়েছে মাত্র একজন নারী শিল্পীর শিল্পকর্ম। ভিডিওতে ১৮১৬ সালে আঁকা একটি পেইন্টিং এর কথা বলা হয়। এটির নাম ‘ইন্টেরিয়র অব দ্যা স্টুডিও অব ভেন ডিল এট সর্বণে’ (Interior of The Studio of Van Deal at Sorbonne)। এটির শিল্পী ফিলিপ্পি ভেন ব্রি (Philippe Van Bree)। এই পেইন্টিং-এ ১৭৮৯-১৯১৪ সালের সাতজন ডাচ নারী শিল্পীকে দেখা যায়। তাদের কেউই একাডেমিতে ন্যুড ড্রইং-এর সুযোগ পান নাই, কেউ কেউ একাডেমি থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন, পাননি সৃজনশীলতার মর্যাদা, কেউবা আবার হয়েছেন যৌন নিপীড়নের শিকার। এখানে আরো জানা যায় ‘ভ্যান গঘ মিউজিয়ামের’ সংগ্রহে ভ্যান গঘের শিল্পকর্ম ছাড়াও ৩০০টি শিল্পকর্ম রয়েছে। সেইখানেও আছে মাত্র একজন নারী শিল্পীর শিল্পকর্ম। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, ভ্যান গঘ মিউজিয়াম ও ‘দ্যা ডাচ ইন প্যারিস ১৭৮৯-১৯১৪’ প্রদর্শনীটি কতটুকু নারী-পুরুষ বৈষম্য থেকে মুক্ত।

Guerrilla Girls Now. Image Source: sevendaysvt.com. Courtesy: Middlebury College Museum of Art.

গেরিলা গার্লস প্রথম থেকেই নিজস্বতা বজায় রেখে দেশে, দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রদর্শনী করে চলেছে। ‘নিজস্বতা’ জোর দিয়ে বলার কারণ, তারা যে মিউজিয়াম কিংবা গ্যালারিতে নিজেদের প্রজেক্ট উপস্থাপন করেছেন তাতে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোরই অনিয়ম, বৈষম্যের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করা হয়েছে। তবে এটাও ঠিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজেদের সমালোচনাকে নিজের আঙ্গিনায় উপস্থাপন করতে দেওয়াটা একপ্রকার আত্মশুদ্ধির দায় বা উদার আচরণ চর্চার মানসিকতা বলা যেতে পারে। যেমন, ২০১৫ সালে গেরিলা গার্লস নিউইয়র্ক এর ‘হুইটনি মিউজিয়াম’ (Whitney Museum)-এর সম্মুখ দেয়ালে মিউজিয়ামেরই সমালোচনা মূলক প্রজেকশন ‘Income Inequality and the Super Rich Hijacking Art’ উপস্থাপন করে। সেই হুইটনি মিউজিয়ামই আবার গেরিলা গার্লসের ১৯৮৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রচারকৃত ৮৮ টি পোস্টার পোর্টফোলিও আকারে সংরক্ষণ করে।

এখন পর্যন্ত গেরিলা গার্লস বেশ কিছু বই প্রকাশ করেছে। বইগুলো হল : Confessions of The Guerrilla Girls (১৯৯৫), Bitches, Bimbos and Ballbreakers: The Guerrilla Girls’ Illustrated Guide to Female Stereotypes (২০০৩), The Guerrilla Girls’ Bedside Companion to the History of Western Art (১৯৯৮), The Guerrilla Girls’ Art Museum Activity Book (২০০৪), The Hysterical Herstory of Hysteria and How It Was Cured: From Ancient Times Until Now (২০১৩)।

Confessions of The Guerrilla GirlsThe Guerrilla Girls’ Bedside Companion to the History of Western Art বইয়ের প্রচ্ছদ। Image Source: amazon.com

তবে যত যাই বলি না কেন, গেরিলা গার্লসের সদস্যদের গরিলা মুখোশ পরিধান একটি বিস্ময়কর বিষয় বটে। ‘Confessions of The Guerrilla Girls’ এ প্রাপ্ত সাক্ষাৎকারে গরিলা মুখোশ পরিধান সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে গেরিলা গার্লসের এক সদস্য বলেন, “গরিলা হওয়ার আগে আমরা কিন্তু গেরিলাই ছিলাম। শুরু থেকে মিডিয়াগুলো আমাদের প্রচারের জন্য স্টিল ছবি চাইছিল। আর আমাদেরও প্রচারণার জন্য ছদ্মবেশ দরকার হয়ে পরে। কেন আমরা গরিলা মুখোশ পরা শুরু করি এখন আর মনে নেই। তবে প্রথম দিককার একটি মিটিংয়ের কথা মনে আছে। যেখানে একজন ভুল করে Guerrilla (গেরিলা) লিখতে গিয়ে Gorilla (গরিলা) লিখে ফেলে। আর সেই ভুল থেকেই গরিলা মুখোশ পরার চিন্তা।” তাছাড়াও গরিলা মুখোশ পরিধান বিষয়ে গেরিলা গার্লসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে তারা যখন জনসম্মুখে মুখোশ পরে কোন পারর্ফমেন্স করেন তখন পারর্ফমেন্সের অংশগ্রহণকারীর চেয়ে বিষয়বস্তু বেশি প্রাধান্য পায়।

মুখোশের মত গেরিলা গার্লসের নামের বিষয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। দলটির এমন নামের কারণ সম্পর্কে বক্তব্য, “আমরা মূলত গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে যে অনুভূতি তা নিয়ে খেলতে চেয়েছিলাম। আমরা কে হতে পারি এবং পরবর্তীতে কোন অনিয়মের বিরুদ্ধে আঘাত আনব তা নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি করতে চেয়েছি। তাছাড়া ‘Guerrilla’ শব্দটি ‘Girl’ শব্দের সাথে শুনতে বেশ ভালো লাগে।”

গেরিলা গার্লসের সকল কাজের পথ যে মসৃণ, বাঁধাহীন তা নয়। তাদের বিপক্ষেও সমালোচনা রয়েছে, বাঁধা রয়েছে। তারপরও ছদ্মবেশের আড়ালে থেকে শিল্পের জগৎ কিংবা সমাজ বাস্তবতায় ঘটতে থাকা অনিয়ম, বৈষম্য, কুসংস্কারের বিপরীতে প্রবাহমান রূপ এই গেরিলা গার্লস।

তথ্যসূত্র:

  • www.guerrillagirls.com
  • Ryzik, M. (2015, August 05). The Guerrilla Girls, After 3 Decades, Still Rattling Art World Cages. The New York Times. Retrieved from https://www.nytimes.com
  • Baunann, B. (2017, March 08). The Guerrilla Girls’ fight against discrimination in the art world. DW. Retrieved from https://www.dw.com
  • Halperin, J. & Burns, C. (2018, September 20). African American Artists Are More Visible Than Ever. So Why Are Museums Giving Them Short Shrift?. Artnet News. Retrieved from https://news.artnet.com
  • Guerrilla Girls (1995). Confessions of the Guerrilla Girls, with an essay by Whitney Chadwick. New York: Harper Perennial. p. 13. ISBN 9780060950880.
  • McShine, K. (1984, May- August). An International Survey of Paintings and Sculpture, FACT SHEET. P.1-2, The Museum Of Modern art.
  • Guerrilla Girls. (2014, January 01). An Interview from the first book, Confessions of the Guerrilla Girls, Published 1995. Internet Archive. Retrieved from https://web.archive.org

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.