সোনার চামচে তুলে খাই মৃত্যু
স্বার্থক কবিতা
নারী : তোমার মহামূল্যবান কবিতাকে
আমি বড়জোর
একটা বিমান বানিয়ে উড়িয়ে দিতে পারি
কিংবা ভাসিয়ে দিতে পারি
বৃষ্টির কান্নায়।
কবি : সার্থক কবিতা।
কবিতা বিমান উড়ে যাক
নেমে আসুক মানুষ বন্দরে,
কবিতা নৌকা ভেসে যাক
নোঙর ফেলুক মানুষের তীরে।
বাংলার যুবক
সামনে লাল সংকেত
আমাকে যেতেই হবে
সহস্র বাধা টপকে আমাকে পৌঁছতেই হবে
উর্বর স্নিগ্ধ ঘ্রাণের কাছে।
সবুজ টি-শার্ট নই
পতপত পতাকা উড়িয়ে হেঁটে যেতে শিখেছি
বাঙলার যুবক।
জন্মসত্য
বের হতে হতে ভিতর ভুলে গেছি
ভিতরে রন্ধনশালা
মা রান্না করছেন জন্মসত্য।
বাইরে হাঁটতে হাঁটতে ভুলে গেছি
পায়ের নিচে শৈশবমাটি।
নদীর ধারায় মা রান্না করছেন ভুবনযন্ত্রণা
পেঁয়াজবাটা আর ধোঁয়া তাড়ানোর ভান করে
চোখের স্নেহে নিভাচ্ছেন চুলো।
মা জানেন না
আগুন কখনো নিভে না
আগুনের দৃশ্য নিভে যায়।
স্যালুলয়েড
চারদিকে ক্যামেরা প্রস্তুত
বিখ্যাত কোম্পানির এমডি স্যার
বস্তির আধমরা বুড়ির হাতে তুলে দিচ্ছেন শীতবস্ত্র
রেডি
ফোর
থ্রি
টু
ওয়ান
জিরো
অ্যাকশান
কোম্পানির এমডি হাসছেন
বুড়ি হাসছেন
শিশুরা দল বেঁধে তালি খেলছে
এমডি স্যার মুক্তোঝরা হাসিতে তুলে দিচ্ছেন শীতবস্ত্র
ওটা বিক্রি করলে দুদিন খাওয়া যায়, দুদিন বাঁচা যায়
বুড়ি যদি একদিন বাঁচে
এমডি স্যার হাজার বছর
বুড়ি মরবে মরুক
স্যালুলয়েড তুমি দীর্ঘজীবী হও।
এক আকাশ ধোঁয়া
মাথায় আগুন ধরে গেছে
অর্থহীন পুড়ে পুড়ে পৃথিবী তিনভাগে কাৎ
এক আকাশ ধোঁয়া
সর্বস্তর বিচরণ করে দেখেছি-
কোথাও কোনো নদীমাতৃক আচরণ নেই।
প্রাগৈতিহাসিক বিজলি
শহরের কোথাও যানজট নেই
মাথায় আবহমান জ্যাম
বোধের হৃৎপিণ্ডে বজ্রঘনিস্ট হর্ন বাজাচ্ছে দুধশিশু
দুদলে দেয়ালে সংঘর্ষ
প্রাগৈতিহাসিক বিজলি দেখে
সাটার আটকে ঘুমোচ্ছে রুক্ষসময়
ট্রাফিক-
সব পথ দ্রুত সামলাও
মধুভরা মনে
বিভ্রান্তপোকার থাবা বিস্তৃত হচ্ছে।
পিপাসা
পৃথিবীর অর্ধাবৃত বুকে স্তনের মতো ঝুলে আছি
আমাকে চুষে খায় সবাই
আর আমি
সোনার চামচে তুলে খাই মৃত্যু।
অলংকরণ : রাজিব রায়