স্বাধীনতা যেভাবে ঢুকলো মোবাইল ফোনে!
যা চাও তা দিব
চাওয়ার বাইরে চাওয়া থাকলে তাও পাবে।
শুধু কাঠের চেয়ার
যাতে ক্ষমতা অটুট রাখতে পারে
সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে!
মাঠের চাষার টাকা
শ্রমিকের ঘামে ভেজা জবজবে নোট
মানসিক শ্রমের করের অর্থ কোন ব্যাপারই নয়
রিকশার পাদানিতে ক্ষয়ে যাওয়া মনুর হাড়
কিংবা সৎ ব্যক্তির যে কোন আবগারি শুল্কের কয়েন
তাও দিব,
শুধু চাই চারপা কাঠের চেয়ারের পা অটুট থাকুক!
কবে যে মহান ব্যক্তিটি বলেছিলেন সহাস্যে—
. — ভুলে গেলে চলবে না
. তোমরা পড়েছো কৃষকের রক্ত ভেজা ফসলের দামে
. তোমরা পড়েছো মজুরের হাড়গোর পানি করার সুযোগে
. তোমরা দেশের জন্য শ্রম দিয়ে দেশের টাকা ফেরত দেবে
. তোমরা কৃষকের সন্তান
. তোমরা মজুরের সন্তান
. তোমরা শ্রমিকের সন্তান।
. কিন্তু সেই কথা শোনার মানুষ কই?
আজ স্বাধীনতা শব্দটি মোবাইলে ঢুকে গেল
যতো পারো ব্যবহার করো ততোবার ইচ্ছে
সময় কোন সমস্যা না, এমনি কি বিলও না
যত খুশি তত ব্যবহার কর
আনলিমিটেড লাইফ টাইম
তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে যতখুশি কথা বলবে এখন
অর্থ কোন সমস্যা না, এমন কি ক্ষণে ক্ষণে
মনে মনে খুশি হয়ে বাড়ি ফিরবে সবাই!
স্বাধীনতা শব্দটি মানুষের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে কেবল
ওই নিরন্ন চাষার হাতে যদি দামি মোবাইল থাকত এখন
সেও ময়লা দুপাটি দাঁত বের করে হাসতো খামারে
আজ যদি মজুরের হাতে ওই আইফোন ফিরে পেত
সেও কোমরের গামছা দিয়েই মোবাইলে লাগা ঘাম মুছতো এখন
আজ যদি শ্রমিকের ছেঁড়া শার্টের পকেটে মোবাইল ঝুলতো
সেও ভাইব্রেশনের আঘাত থেকে নিজের বুককে রক্ষা করতে শিখতো!
স্বাধীনতা তাদের অটুট আছে
শ্রম আছে
দুঃখ আছে
মজুরি হারানোর বেদনা আছে
না খেয়ে ক্ষুধার্ত থাকবার স্বাধীনতা আছে
মালিকের নির্বোধ শাসানি আছে
শাসানির স্বাধীনতা আছে
নাই শুধু তাদের স্বাধীন মোবাইল ফোন।
স্বাধীনতা শব্দটি সহজে মোবাইলে ঢুকে গেল!
স্বাধীনতা শব্দটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় আজ :
. —অপরের অধীনতাই এখন স্বাধীনতা
তাই স্বাধীনতা শব্দটি একদম ভাল লাগে না এখন!
আজ স্বাধীনতা শব্দটি তোমার বুক থেকে কেড়ে নেয়া হবে একদম!