ফিরে যাচ্ছে ফুল
অভিকর্ষ
কোথাও কি চলে যাচ্ছে পৃথিবী- রঙিন মার্বেল
হারিয়ে ফেলে বিমর্ষ বসে থাকে কিশোর একলা মাঠে!
মায়ের আঁচল থেকে ছড়িয়ে পড়া রোদ ভরে যেতো আকাশে আকাশে-
তার থেকে অনেক দূরে
পৃথিবী কি কোথাও ঝাপসা হয়ে আসে!
স্মৃতি ভর্তি জারগুলো যদি ভেঙে যায় একদিন
তখন সন্ধ্যায় জড়িয়ে থাকবে হাস্নাহেনার ঘ্রাণ যেকোনো দূরত্বের পাশে।
নির্জন আয়ু
এই যে দূরত্ব নক্ষত্রের চোখে
এখানে নিকেল ধুলোয় ঢেকে থাকে সব
নদীর শরীরের ভেসে যাওয়া ফুলে
ভ্রমরের আয়ু ধুয়ে যায় যে নিরব
নক্ষত্রের ভালোবাসা দূর থেকে তবু
মৃত্যুমোহ যেভাবে ইশারায় ভাসে
মানুষের ভালোবাসা রক্তে পরমাণু
একসাথে জেগে থাকে বিদ্বেষের পাশে
যেভাবে ভেসে যায় ফুল স্রোতমুখে
জলের শরীরে কাঁদে জল নিশ্চুপ
নক্ষত্রের নির্জন আয়ু কেটে যায়
দীর্ঘ বিচ্ছেদে এই ঘুমের অসুখ
রোদকুয়াশা
হৃদয়ের একরোখা ঘোরে যে অহং লুকানো থাকে
তার থেকে দূরে-গুল্মবনে
একদিন খুব কাছে বসেছিল রোদ;
শীতের জলপাইবনে রাত্রির ক্যাম্পফায়ারে,
গীটারটা বেজেছিলো একা একা খুব
মনে পড়ে-ভুলে যাই,
সবগান সঙ্গে করে কারা যেন চলে যায় জিপসিকার্নিভালে!
সেইসব চলে যাওয়া শুধু থেকে যায়-
দূরত্ব জেগে রয় অনিদ্রার পাশে।
মায়ার খিলান
পৃথিবীতে সমস্ত প্রেম একতরফা জেনেও
হৃদয় ভালোবাসে নিমফুল, বাতাসের বুকে
ঘ্রাণ রেখে যারা চলে যায় দূরে- আনত পথের দিকে
মুখ রেখে চেয়ে থাকা- যেকোনো চলে যাওয়ার দৃশ্যে
লোনলিনেস নেমে আসে অচেনা সন্ধ্যার গভীরে!
তারপরও মানুষ সোমেশ্বরী নদীর কাছে যায়
যেখানে অপরূপ মায়ার খিলান আঁকা আকাশের গায়ে!
স্পর্শের অধিক অনুভবে এইভাবে বেঁচে থেকে
কেউ কেউ পাখিদের কাছে থেকে শিখে নেয় ঝড়-
অন্তরগত বিষাদের মৌসুমে।
বিয়োগ
অনুভূতি নাশ করে
ফিরে যাচ্ছে ফুল
বনের উলটো পথে-
তার কোনো অভিমান নেই
বৃক্ষের-বাতাসের-ভ্রমরের সাথে
তবু সে পাপড়ি থেকে ঘ্রাণ রেখে
চলে যায় একা
নিজের ছায়ার সাথে-
দূর পথে তাকে ডাকে শূন্যতা!