:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
তন্ময় হাসান

লেখক, অনুবাদক

পিকাসো সম্পর্কে যে কথাগুলো আপনি হয়তো জানেন না
পিকাসোর বিখ্যাত পেইন্টিং : গের্নিকা

পিকাসো সম্পর্কে যে কথাগুলো আপনি হয়তো জানেন না

১.
পিকাসোর নামে শব্দ আছে মোট ২৩টি

তার পুরো নাম পাবলো ডিয়াগো হোসে ফ্রানসিসকো ডি পাউলা হুয়ান নেপোমুসেনো মারিয়া ডি লস রেমেডিওস ক্রিপিয়ানো ডি লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ মার্টির প্যাট্রিসিও কিল্ট রুইস এ পিকাসো।
তাকে নামকরন করা হয় ভিন্ন ভিন্ন সাধু ও গুরুজনের নামে। পিকাসো নামটি সে পায় মা মারিয়া পিকাসো এ লোপেজ এর কাছ থেকে।

 

২.
পিকাসোর প্রথম উচ্চারিত শব্দ পেন্সিল

যেন এ জন্মই হয়েছিলো শিল্পের জন্য। শিশু পিকাসোর প্রথম উচ্চারিত শব্দ ছিলো ‘পিজ’ যা লাপিজ এর প্রচলিত নাম। স্প্যানিশ শব্দ লাপিজ অর্থ পেন্সিল।
পিকাসোর পিতা রুইজ ছিলেন আর্ট প্রফেসর এবং পিকাসোর প্রথম শিক্ষকও। ৭ বছর বয়সে পিকাসোর শিক্ষা শুরু হলেও, মাত্র ১৩ বছর বয়সে তার বাবা বুঝতে পারেন যে পিকাসো তাকে ছাড়িয়ে চলে গেছে এবং তিনি পেইন্টিং ছেড়ে দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেন।

 

৩.
প্রথম শিল্পকর্ম

মাত্র ৯ বছর বয়সে তার প্রথম শিল্পকর্ম লে পিকাডর নামে সম্পূর্ণ হয়। ছবিটিতে ছিলো ষাড়যুদ্ধের মাঝে একজন অশ্বারোহী মানুষ।
চিত্রকর হিসেবে তার প্রথম উল্লেখযোগ্য ‘একাডেমিক’ কাজ ছিলো ফার্স্ট কমিউন। প্রকাশিত হয় যখন পিকাসোর বয়স ছিলো মাত্র ১৫। ছবিটিতে দেখা যায় তার বাবা, মা, ছোটবোন হাঁটু গেড়ে বসে আছেন একটি অল্টারের সামনে।

 

৪.
জন্মের সময় ধাত্রী পিকাসোকে মৃত শিশু ভেবেছিলেন

তার জন্ম প্রক্রিয়া অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায় এবং জন্ম নেবার পরও শিশু পিকাসো ছিলেন অনেক দূর্বল। ধাত্রী তাকে মৃত ভেবে রেখে চলে গেলে, তার মামা ও ডাক্তার সালভাদরের চেষ্টায় বেঁচে ওঠেন তিনি।

 

৫.
ছাত্র হিসেবে পিকাসো ছিলেন খুবই খারাপ

আর্টিস্ট হিসেবে অসামান্য পিকাসো ছিলেন একজন খারাপ ছাত্র। তাকে বর্তে দেয়া ক্লাসওয়ার্ক না করায় ঘন ঘন যেতে হত ডিটেনশন রুমে।
ডিটেনশন রুম নিয়ে পিকাসো বলেন, ‘খারাপ ছাত্র হওয়ায় প্রায়ই আমাকে যেতে হতো ডিটেনশনে। একটা খালি রুম, একটা বেঞ্চ, আর সাদা দেয়াল। আমি ওখানে প্রচুর ছবি আঁকতাম। আমার খুব পছন্দ ছিলো রুমটা। আমি সেখানে বেশি সময় থাকতে পারতাম আর আঁকতে পারতাম।

 

৬.
প্রথম চাকুরী

পিকাসোর প্রথম চাকুরী আসে প্যারিসের আর্ট ডিলার পেরে মেনাচের হাত ধরে। পিকাসো মেনাচের সাথে যে চুক্তি করেন, তাতে তিনি মাসে ১৫০ ফ্রান্ক আয় করবেন। (আজকের দিনে ৭৫০ মার্কিন ডলার।)

 

৭.
পিকাসো কি সত্যিই মোনালিসা চুরি করেছিলেন?

না, তিনি চুরি করেননি। কিন্তু ১৯১১ সালে ভিঞ্চির আঁকা ‘মোনালিসা’ যখন চুরি হয়, পুলিশ পিকাসোর বন্ধু এপলিয়ানোকে সন্দেহ করে। পরে এপলিয়ানোর তথ্যে পিকাসোকেও সন্দেহভাজন হিসেবে তুলে আনা হয়।
দুজনকেই পরর্বতী সময়ে নির্দোষ হিসেবে ছেড়ে দেয়া হয়।

 

৮.
কিউবিজম: ছোট কিউবে ভর্তি ড্রইং

কিউবিজম এর শুরু ১৯০৯ সালে। পিকাসো এবং জর্জ ব্রাক মিলে এর প্রচলন শুরু করেন।
লুইস ভওসেলাস, একজন ফ্রেঞ্চ আর্ট ক্রিটিকের মতে, তাদের পেইনটিংসগুলো ছিলো ছোট ছোট কিউব দিয়ে ভর্তি।

 

৯.
একমাত্র গুরু ‘পল সেজান’
জর্জ ব্রাসাই যখন ১৯৪৩ সালে পিকাসোর ইন্টারভিউ নিচ্ছিলেন, তখন পিকাসো, পল সেজানকে তার একমাত্র গুরু হিসেবে আখ্যা দেন।

 

১০.
গের্নিকা

গের্নিকা, পিকাসোর আঁকা বিখ্যাত তৈলচিত্র।
একজন জার্মান নাজি অফিসার যখন এই চিত্রকর্ম দেখেন তখন জিজ্ঞেস করেন, ‘এটা কি তুমি করেছো?’
পিকাসো উত্তর দেন, ‘না, তুমি করেছো!’

 

১১.
পিকাসোর শিল্প প্রাচুর্য

৭৮ বছরের শিল্প জীবনে তিনি প্রায় ১৪৭,০০০ শিল্পকর্ম সম্পাদন করেন। ১৩৫০০ পেইনটিং, ১০০,০০০ প্রিন্ট, ৩০০ স্থাপত্য এবং ৩৪০০ চিত্রণ।

 

১২.
পিকাসোর পরিহিত দাগকাটা শার্টটি কোন সাধারণ শার্ট নয়

দাগকাটা ব্রেটন শার্টটি ১৮৫৮ সালে ফ্রেঞ্চ নাবিকদের ইউনিফর্ম হিসেবে প্রচলন করা হয়। পিকাসো তার সময়ে ফ্যাশন সম্পর্কে দক্ষ ছিলেন। তার বহুল প্রচলিত শার্টটি ডিজাইন করেছিলেন কোকো চ্যানেল। শার্টটিতে ২১টি স্ট্রাইপ দেখা যায়, যা নেপোলিয়ানের জয় গুলোকে নির্দেশ করে।

 

১৩.
ল্যুভ এর এক্সিবিশন

পিকাসো একমাত্র শিল্পী ছিলেন যার শিল্পকর্ম নিয়ে ল্যুভ জাদুঘরের গ্রান্ড গ্যালারিতে একটি এক্সিবিশন করা হয়। এক্সিবিশনটি ছিলো তার ৯০ বছর উদযাপন উপলক্ষে।

 

১৪.
কবি ও নাট্যকার পিকাসো

১৯৩৫ সালে, যখন তার বিয়ে ভেঙে যায়, পিকাসো তখন কবিতা লিখতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি দুইটি জাদুবাস্তব নাটকও রচনা করেন।
১৯৩৫ থেকে ১৯৫৯ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০০ কবিতা লেখেন, যার অধিকাংশই শিরোনামহীন। কবিতাগুলোতে শুধু তারিখ আর স্থান উল্লেখ থাকতো।
লোকমুখে শোনা যায় যে, পিকাসো ভাবতেন তিনি তার কবিতার জন্য বিখ্যাত হবেন। পেইনটিংস নয়।

 

১৫.
শেষকৃত্য

পিকাসোকে কবর দেয়া হয় চেতাওতে, দক্ষিণ ফ্রান্সের একটা গ্রাম। পিকাসোর ভাষ্যমতে তিনি সম্পূর্ণ জায়গাটা কিনে ফেলেছিলেন, জানতে পেরে যে এটা সেইন্ট ভিক্টোরিয়ার ঢালে অবস্থিত।
সেইন্ট ভিক্টোরিয়া পাহাড়টি তার গুরু পল সেজান ৩০ বারের বেশি এঁকেছেন।
পিকাসো তার এজেন্টকে এক কথোপকথনে বলেন যে, ‘আমি সেজানের পাহাড় কিনে ফেলেছি।’

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.