ক্যামেরা ও কুকুর বিষয়ক জটিলতা
ভালো দেখে একটা ক্যামেরা কেনা আমার খুবই দরকার। মহল্লার একটা নেড়ি কুকুর আমার পেছন পেছন ঘুরছে বহুদিন ধরে। ওর দিকে তাকালে লেজ নেড়ে অবিকল লাজুক বন্ধুর মতো হেসে বলে, আমার একটা ছবি তুলে দেবে?
কুকুর কথা বলছে? নাকি আমার ভ্রম হচ্ছে? আমি ওর দিকে ভালো করে তাকাই। ও বিব্রত হয়ে লেজ নাড়ে, পেট চুলকায়, ইতিউতি তাকায়। আমি প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল বের করে টাইম দেখি। নয়টা-পাঁচটা অফিস আমার। দরিদ্র আত্মীয়ের দিকে লোকজন যেরকম হাসি দেয় সেরকরম শুকনা হাসি দিয়ে হাটা ধরি। ও আরও কিছু দূর আসে। কিন্তু মহল্লার বাইরে যায় না।
কিন্তু প্রায় প্রতিদিন কুকুরটি আমার পিছু নেয়। আমি অবসরে ওর কথা ভাবি। ভাবি ছবি তুলে দেবো। ক্যামেরা নেই বলে ক্যামেরার দামের খোঁজখবর নিই। দিন যায় কিন্তু আমার ক্যামেরা কেনা হয় না। এটা সেটা কেনা হয়, হয়তো কিন্ডল, কিংবা গার্লফ্রেন্ডের জন্য দামি গিফট, অথবা নিজেরই একটা অ্যাকসিডেন্টে পাতলা পায়খানার মতো কিছু টাকা হয়ত বেরিয়ে যায়।
প্রতিদিন সেই নেড়িকুকুর কিন্তু আমার পিছু নেয়। আমি মাঝে মধ্যে বনরুটি কিনে দেই। সাকিব আল হাসানের টিফিন বিস্কুট কিনে দিই। ও হয়তো একটা কামড় দেয় বিস্কুটে কিংবা বনরুটিতে তারপর ফেলে দেয়। ভাবি হয়ত ক্ষুধামান্দ্য। খাদ্যে অরুচি। ভাবি টাকা হলে ওকে আমি কিনে দেবো মাল্টিভিটামিন।
হাতে সময় থাকলে কোন কোনদিন ওকে ভালোভাবে দেখি। শীর্ণ, রোগা একটা নেড়িকুকুর। নেড়িকুকুর সম্পর্কে পাবলিক পারসেপশন ফুলফিল করা একটা চেহারা। মনে হয় এঁকে নেড়ি কুকুর না বলে নেড়িকুত্তা বলা ভালো হবে। কিন্তু পুস্তক পড়ুয়া আমি ভদ্রলোক। নেড়িকুত্তা বলতে বাঁধোবাঁধো ঠেকে। আমি ডোবারম্যান, অ্যালসেশিয়ান এইসব অভিজাত কুকুরের সাথে ওকে মিলিয়ে দেখি মনে মনে। ভাবি ও একটা ছোটলোক কুকুর। ও কিন্তু অপরাধীর মতো আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। মাঝে মধ্যে লজ্জার মাথা খেয়ে বলে, আমার একটা ছবি তুলে দেবে?
আমি বলি, মোবাইলের ক্যামেরায় হলে চলবে? সিমফনি? পাচ মেগাপিক্সেল, গরিবের আইফোন। চলবে? ও গাইগুই করে। আমি বুঝি ওর চাই ডিএসএলআর। নেড়ি হলে কি হবে! আত্মসম্মানবোধ টনটনে। আমি টাকা জমানোর কথা ভাবি। ভাবি গার্লফ্রেন্ডকে গিফট দেবো না দুই মাস, আরও মিতব্যয়ী হবো, ছেঁটে ফেলব টুকিটাকি কেনাকাটা, পারফিউম কমদামেরটা কিনব। ও গলির মুখ পর্যন্ত আমার পিছে পিছে আসে। কিছু বলে না। আমি কিন্তু স্পষ্ট শুনতে পাই: আমার একটা ছবি তুলে দেবে? আমার একটা ছবি তুলে দেবে?
আমি অবসর পেলেই নেড়িটার কথা ভাবি। কুকুর নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা শুরু করে দেই। পৃথিবীর বিখ্যাত কুকুরগুলোর কথা জানতে পারি। মনে পড়ে স্কুলের র্যা পিড রিডারের সেই রিপ ভ্যান উইংকলের কুকুরটির কথা। মহাকাশচারী লাইকার কথা। মহাকবি বায়রনের সেই বিখ্যাত কুকুর বেটসোয়াইনের কথা মনে পড়ে বেশি—যার সমাধি স্বয়ং কবির সমাধির চেয়েও বিখ্যাত। ভাবি জেমস থার্বার কুকুর নিয়েই বা এতো লিখতে গেলেন কেন? কেন আঁকতে গেলেন এত কার্টুন? থার্বার লিখেছেন, কুকুরেরা মানুষকে নিয়ে যত মজা পায়, মানুষেরা কুকুর নিয়ে তত মজা পায় না কারণ এই দুইরকম জন্তুর মধ্যে মানুষই বেশি হাস্যকর।
আলেক্সান্ড্রা হরোউইটসের কুকুর ফিনেগানকেও আমি চিনি। জেমস জয়েসকে মনে করালেন কিনা বুঝতে পারি না। মনে পড়ে শরৎচন্দ্রের কুকুর ভেলুর কথা। যার মৃত্যুর পরে, শোকাকুল শরৎ ডায়েরির মলাটের উল্টাদিকে তারিখসহ লিখেন, আজ ভেলু দেহ রাখলো!
কুকুর নিয়ে বিশ্বসাহিত্যে অসাধারণ সব লেখা রয়েছে। পা চিন-এর সেই বিখ্যাত গল্প ডগ এর কথা কে না জানে যার কারনে তাকে নিজ দেশ চীন ছেড়ে অন্যদেশে পালাতে হয়েছিল। স্টিফেন ক্রেন লিখিত এ ডার্ক ব্রাউন ডগ নামের পরিচিত মার্কিন গল্পটাও কি মনে পড়ে না? শিশুর চোখে দেখা এক অনাবিল কুকুরজীবন। সন্দীপন লিখেছেন কুকুর সম্পর্কে একটা- দুটো কথা যা আমি জানি। নাম জানাটাই সার। প্রকৃতপক্ষে সেখানে কুকুর বিষয়ক কিছু আছে কিনা জানি না। পড়া হয়নি। শুভাশিস সিনহার সাম্প্রতিক গল্প কুকুর ও মানবিক জটিলতা বিষয়ক গল্প মনে পড়ে। বন্ধুদের সাথে আলাপে প্রিয় গল্পের তালিকায় চেখভের আ লেডি উইথ এ ডগ বা কুকুরসঙ্গী মহিলার নাম আগে চলে আসে। কুকুর বিষয়ক আমার জ্ঞান তো বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের। কিন্তু কুকুরের এনসাইক্লোপিডিয়া লিখে তো কোন লাভ নাই!
হঠাৎ একদিন দেখি আমার অফিসের গেটকিপারের পাশে একটা কুকুর। গেটকিপারকে নাম জিজ্ঞেস করে অবাক হয়ে যাই যখন জানতে পারি কুকুরটির নাম দেলোয়ার। টম, জনি, পমপম, বাঘিরা, জিমি, রন, বাঘা, জন, ম্যাক্স ইত্যাদি পশ্চিমাগন্ধী নামের ভিড়ে এই ব্যতিক্রমী নাম আমাকে অভিভুত করে। জানতে চাই কেন এই নাম? জবাব আসে, অফিসের বড় স্যারের নাম দেলোয়ার।
হঠাৎ একদিন দেখি আমার অফিসের গেটকিপারের পাশে একটা কুকুর। গেটকিপারকে নাম জিজ্ঞেস করে অবাক হয়ে যাই যখন জানতে পারি কুকুরটির নাম দেলোয়ার। টম, জনি, পমপম, বাঘিরা, জিমি, রন, বাঘা, জন, ম্যাক্স ইত্যাদি পশ্চিমাগন্ধী নামের ভিড়ে এই ব্যতিক্রমী নাম আমাকে অভিভুত করে। জানতে চাই কেন এই নাম? জবাব আসে, অফিসের বড় স্যারের নাম দেলোয়ার। সে গোপনে আমাকে এই তথ্য দেয়- রহস্যময় একটা হাসি সমেত।
কুকুর বিষয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ম্যানেজমেন্টে আমার সমস্যা হয়ে যায়। গার্লফ্রেন্ডকে একদিন যখন বলি, জানো, কুকুরদের এক নম্বর সমস্যা স্থূলতা? কিন্তু দেখো আমাদের নেড়ি কুকুরগুলোর অবস্থা! কেমন হাড়জিরজিরে অবস্থা! গার্লফ্রেন্ড আমাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে সন্দেহ নিয়ে বলে, আচ্ছা তোমার হইছে কী বলো তো? কি কুকুর কুকুর শুরু করছ ইদানিং! আমরা কি কুকুরের গল্প করতে আসি এখানে? নাকি প্রেম করতে আসি?
আমি কি বলব বুঝতে পারি না। আমি ভ্যাবাচ্যাকা খাই যদিও চট করে মুখে পুরি লাচ্ছির স্ট্র। তারপর ভাবিঃ আচ্ছা, কুকুরেরাও কি প্রেম করে? ডেট করতে যায়? ভ্যাবাচ্যাকা খায়?
আমার কথাবার্তায় কলিগরা অবাক হয়ে বলে, জাহিদ সাহেব মনে হয় কুকুর বিষয়ে খুব পড়াশোনা করছেন! আমি হে হে করে বোকার মত হাসি।
যে কোম্পানিতে চাকরি করি, সেই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের দিন প্রত্যেকের কিছু না কিছু পারফর্ম করতে হয়। আমি জোক শোনাই: আপনাদের সেই আইরশ মহিলা দুজনের কথা মনে আছে? তারা যখন প্রথম আমেরিকায় গিয়ে ফুডশপে গিয়ে হটডগ খেয়ে খুবই অবাক হয়েছিল? একজন আরেকজন জিজ্ঞেস করছে আপনি ডগের কোন অংশ পেয়েছেন?
আমার কলিগ বলে, জাহিদ সাহেব, আপনি শিল্পমনস্ক মানুষ। এইসব খুচরো জোক বললে চলবে না। অন্য কিছু করুন। আমি তাদেরকে কবিতা শোনাই।
একটি কুকুর এসে পা তুলে দাঁড়ায়,
গিয়েছিলে কতদূর?
অনিমেষ একটি কুকুর বলে,
এত দেরি, রাত যে দুপুর?
মধ্যরাতে সদর দরজায়
ট্যাক্সির মিটার ঘুরে উঠে যায়,
তৃতীয়টি সেই দিকে চেয়ে বলে,
এখন মাসের শেষে বেহিসেবি কি মানায়?
তিনটি কুকুর ঘেরা বাড়ির দরজায়,
মধ্যরাতে নিদ্রাতুর মিনতি ও অক্লান্ত তাতাই
সসঙ্কোচে তিনজনে নেমে যাই,
তিনটি কুকুর
ঘুরে ফিরে প্রশ্ন করে,
এত দেরি, রাত যে দুপুর?
আমি ভালোভাবে আবৃত্তি করি। হাততালি পড়ে বৃষ্টির মতো। কিন্তু বাড়ি ফিরে ভেবে অবাক হই। আমার সবকিছুর ভেতরে এভাবে কুকুর চলে আসছে কেন? আমি বিব্রত বোধ করি। আসলে এইসব মুহুর্তগুলোতে আমার নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
আমি ভাবি একটা ক্যামেরা কিনে কুকুরটার ছবি তুলে দিতে পারলে আমার মাথা থেকে কুকুরটাকে ঝেড়ে ফেলতে পারবো। সেই নেড়ি কুকুরটা- বিব্রত ও লাজুক কুকুরটাকে ঝেড়ে ফেলতে পারবো। যে আমার ভাবনা মধ্যে এসে অন্তত লাজুক হেসে অবিকল বন্ধুর মতো বলবে না, আমাকে একটা ছবি তুলে দেবে?
কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও নিয়মিত আমার সাথে নেড়িকুকুরটির দেখা হয়। দুই একদিন কোন কারণে দেখা না হলে আমার অস্বস্তি লাগে। মনে হয় কি যেন করা হয়নি আজ। এমনকি যেদিন অফিস থাকে না সেদিনও সকালবেলা বেরিয়ে পড়ি অন্তত কুকুরটার সাথে একবার দেখা করতে। আমার বাসার লোক আমার আচরণে পাগলামির লক্ষণ খোঁজে। কিন্তু আমি দিব্যি সুস্থ লোকের মতো বাকি সবকিছু করি।
আমি মাঝে মধ্যে কাটাবনের দোকানগুলোতে যাই। গিয়ে কুকুর দেখি। দরদাম জিজ্ঞেস করি। কিন্তু দোকানের লোকগুলো অচিরেই বুঝে ফেলে আমি কেনার লোক নই। আর বিরক্ত হয়ে আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়। আমি খাঁচায় রাখা কিউট কিউট কুকুরগুলোর দিকে তাকাই। আর তখনও মনে পড়ে নেড়িকুকুরটার কথা। আমি কিছুদিন আগে একটা টি-শার্ট কিনেছি বাসায় পরব বলে। শার্ট-টার বুকের উপরেই একটা কুকুরের মাথা। কি যে ভাল লাগল! কুকুর দেখেই টি-শার্ট টা পছন্দ হয়ে গেল। রাস্তাঘাটে কেউ কুকুর নিয়ে গেলে যেচে গিয়ে জিজ্ঞেস করি: ভাই কুকুরটা কিনেছেন কত দিয়ে? কেউ বিরক্ত হয়। কেউ বা আগ্রহের সঙ্গে দাম বলে।
আমি টের পাই কুকুর নিয়ে আমার এই অবসেশন দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয় আমার পরিবারের লোকজনকে। আমার ভাই, ভাবি, মা, আমার গার্লফ্রেন্ড দুশ্চিন্তা করে। কী হল আমার?
তারা জানে, আপাতভাবে আমি পুরোপুরি সুস্থ। আমাকে অসুস্থ বা অপ্রকৃতিস্থ বলার কোন যুক্তি তাদের হাতে নেই। শুধু তারা বুঝতে পারে আমার ভেতরে চিন্তায় কুকুর সক্রিয় থাকে সবসময়। আমি কথাপ্রসঙ্গে কুকুরের কথা তুললেও তারা পরস্পরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে। আমিও চেষ্টা করি কুকুর নিয়ে তাদেরকে কিছু না বলতে কিন্তু যখন কুকুর বিষয়ক প্রসঙ্গ বা ভাবনা আসে তখন আমার নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রন থাকে না।
আমার দুঃস্বপ্নের ভেতরেও একটা কালো লোমশ কুকুর তাড়া করে। আমি আশা করে থাকি সেই দুঃস্বপ্নে নেড়ি কুকুরটা আসুক। এসে বলুকঃ আমাকে একটা ছবি তুলে দেবে? কিন্তু সেটা হয় না।
আমি ভাবি একটা ক্যামেরা কিনে কুকুরটার ছবি তুলে দিতে পারলে আমার মাথা থেকে কুকুরটাকে ঝেড়ে ফেলতে পারবো। সেই নেড়ি কুকুরটা- বিব্রত ও লাজুক কুকুরটাকে ঝেড়ে ফেলতে পারবো। যে আমার ভাবনা মধ্যে এসে অন্তত লাজুক হেসে অবিকল বন্ধুর মতো বলবে না, আমাকে একটা ছবি তুলে দেবে?
কিন্ত আমার ক্যামেরা কেনা হয় না। একদিন ভেবেছি বন্ধুর ক্যামেরা এনে ছবি তুলে দেবো। কিন্তু তাতেও এই নাছোরবান্দা নেড়িকুকুর গাইগুই করে। তার চাপা অমত প্রকাশ করে, অনিচ্ছা ব্যক্ত করে। আমি বুঝতে পারি আমার নিজের ক্যামেরায় সে বন্দী হতে চায়, আমার বন্ধুর ক্যামেরায় নয়।
কিন্তু আমার সামর্থ সীমিত। বিভিন্ন আর্জেন্সি চলে আসে। আমার ফুপু মারা যায়। আমার বন্ধুর বিয়ে হয়। সেখানে কিছু টাকা বেরিয়ে যায়। দোকানে গিয়ে আমার গার্লফ্রেন্ডের কিছু একটা খুব বেশ পছন্দ হয়ে যায়। আমি লাজুক হাসি। আমি বিব্রত হয়ে কিনে দিই। আমার টাকা দিব্যি বেরিয়ে যায়। কোনো কোনো মাসে আমি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। চিকিৎসায় কিছু টাকা বেরিয়ে যায়। আমার ক্যামেরা কেনা হয় না। যদিও আমি বুঝতে পারি একটা ক্যামেরা কেনা আমার ভীষণ দরকার।
কিন্তু কত কিছু ঘটে যায়। আমি ইদানিং নেড়ি কুকুরটার দিকে তাকাতে পারি না। ওর সামনে বিব্রত হয়ে তাকাই। এটা তো হাস্যকর যে একটা পথের নেড়ি কুকুরের দৃষ্টি আমাকে বিব্রত করে ফেলে! কেননা এখনো নিয়মিত মহল্লার একটা নেড়ি কুকুর আমার পেছন পেছন ঘোরে।
ওর দিকে তাকালে লেজ নেড়ে অবিকল লাজুক বন্ধুর মতো হেসে বলে, আমার একটা ছবি তুলে দেবে?
আমি ভালো করে দেখি। আমি ওর দিকে ভালো করে তাকাই। ও বিব্রত হয়ে লেজ নাড়ে, পেট চুলকায়, ইতিউতি তাকায়। আমি প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল বের করে টাইম দেখি। নয়টা-পাঁচটা অফিস আমার। দরিদ্র আত্মীয়ের দিকে লোকেরা যেমন হাসি দেয় সেরকম শুকনা হাসি দিয়ে হাটা ধরি। চারপাশের নাগরিক কোলাহল, হট্টগোল, চলমান মানুষ ও যানবাহনের সারি, আওয়াজ—এসবের মধ্যে আমি গিয়ে পড়ি। কিন্তু আমার শ্রুতিকেন্দ্রে বাজতেই থাকে: আমাকে একটা ছবি তুলে দেবে? আমাকে একটা ছবি তুলে দেবে?