:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
মোশতাক আহমদ

কবি, গদ্যকার

সেলিম মোরশেদের কবিতা-কেন্দ্রিক আলো-অন্ধকারের কোলাজ
চিত্রকর্ম: শাহীনুর রহমানের আঁকা প্রচ্ছদ থেকে

সেলিম মোরশেদের কবিতা-কেন্দ্রিক আলো-অন্ধকারের কোলাজ

আলো-অন্ধকারে যাই—মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়, কোন্ এক বোধ কাজ করে;
স্বপ্ন নয়—শান্তি নয়—ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়;
আমি তারে পারি না এড়াতে, …

(জীবনানন্দ দাশ, বোধ)

কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদের কবিতার বই ‘দাঁড়িয়ে অতৃপ্ত রোদ’। বইটির তিনটি অংশ–শোকগাথা (মৃত্যুর গানের সংগ্রহ), প্রেমের পদ্য আর রাজনীতিক ছড়া। গল্প, উপন্যাস আর গদ্য রচনার স্বতন্ত্র এক ভুবনের অধিকারী হয়েও একটি কৃশকায় কবিতার বই তাঁর অপ্রকাশের ভার নিয়ে গদ্য প্রবাহের অমীমাংসিত ভাবনাগুলোকেই ধারণ করেছে ধরে নিয়ে কবিতার বইটি পড়তে বসা। সেলিম মোরশেদের কবিতা রচনা কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষী কাজ নয়, আত্মিক তাগিদে রচনা বলেই মনে হয়। হয়তোবা এই গ্রন্থালোচনাও তাঁর অভিপ্রেত নয়। আহমেদ নকীব বলেছেন সেলিম মোরশেদের কবিতাচর্চা ‘যেন একান্তই নিজের সাথে তাঁর বোঝাপড়া’। সম্প্রতি রবার্ট ফ্রস্টের কিছু কবিতা অনুবাদ করছেন, সেও এই আত্মিক তাগিদ থেকেই নিশ্চয়ই।

যেহেতু কৃশকায় বই, এর কবিতা সংখ্যাও অংগুলিমেয়; তাই কবি সেলিম মোরশেদের দ্যোতনা, অভীপ্সা খুঁজতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করা ভালো বইটির বিন্যাস, উৎসর্গপত্র, এমনকি পৃষ্ঠা সজ্জাও। কবিতাগুলো নিজের মতো করে পাঠ করে নোট বইতে টুকে রাখলাম কিছু কিছু পাঠ অভিজ্ঞতা আর ভাবনা। পাঠকের জন্য এই লেখাটি অবশ্য গ্রন্থ পরিচিতির অধিক কিছু হয়তো হবে না।

 

মৃত্যুময় কবিতা

সূর্যাস্ত আসে, চরাচরে রাত্রি নেমে আসে জীবনের প্রতিপক্ষ হয়ে; রোদের বুকে তাই অসম্পন্ন অনুভূতি, রোদের অন্তরে তাই হাহাকার। রোদ, যেনবা জীবনেরই প্রতিভূ। মৃত্যু আমাদের কবির প্রতিপক্ষ, কিন্তু সমান্তরাল প্রবাহ এই মৃত্যুর। জীবনের সমস্ত চিত্রনাট্য জুড়ে পথের পাঁচালীর ইন্দিরা ঠাকুরণের মতো গড়িয়ে গড়িয়ে চলে এই মৃত্যু। সময় সুযোগ মতো ছোবল হানে, সবাই তো আর সেলিম মোরশেদের গল্পের চরিত্র হেমাঙ্গিনীর মতো সাহসী নয় যে তাকে পরাস্ত করতে পারবে। মৃত্যু আমাদের যুযুধান প্রতিপক্ষ।

কবি পরের দিনের প্রভাতের রোদ হয়ে পুনঃপ্রকাশিত হন, কিন্তু তাঁর আশপাশ থেকে অগ্রজ, অনুজ আর সতীর্থরা একের পর এক পাড়ি জমাচ্ছে মৃত্যুময় চিরহরিৎ দেশে। এই বেদনা অপার। একজন সতীর্থের মৃত্যু তো নিজেকে একবার করে খণ্ডিত করে দেয়। একজন অগ্রজের মৃত্যুর পরদিন পথের বাঁকে এসে দাঁড়ালে সামনে থাকে না কোনো নিশানা, দিশা। মাথার উপর থেকে ধ্বসে যায় ছাদের ছায়া। আর কবির কাঁধে যদি বয়ে নিতে হয় অনুজের শব? সে এক মর্মন্তুদ ব্যাপার। নিজের প্রবাহটিকে নিজের চোখে বিলীন হয়ে যেতে দেখার অভিজ্ঞতা। নিজের অভিজ্ঞতাগুলো যেন ‘মরুপথে হারালো ধারা’। সৃজনশীল রোদ হয়ে জন্ম নিয়েও রোদ কিংবা আলোর অনিত্যতায় কবির সংশয়, তাই পরজন্মে বৃষ্টির ফোঁটা হয়ে জন্মাতে চান। কেননা কবি দেখেছেন দিনের আলো নিভে গেলে রাতে যে মোমের আলোর শরণ নিতে হয়, সহসা ঝোড়ো হাওয়ায় তার শিখা মৃত্যুর গান গেয়ে উঠে, মুছে যায় পৃথিবীতে আমাদের শিল্পের উত্তরাধিকার— হতে পারে তা কোনো এক তরুণ কবির বিভিন্ন অপ্রকাশিত প্রতিশ্রুতি।

রাত্রির অপারতায় আমাদের বিচ্ছিন্নতা
নিলাজ মোমের আলো
আজন্ম নেভায় উত্তরাধিকার
যখন স্রোতের ঊনতা
শুকিয়ে যাওয়া রক্তে।

(সেলিম মোরশেদ, মৃত্যুর গান-১)

কয়েকটা নাতিদীর্ঘ শোকগাথা গ্রন্থিত হয়েছে মৃত্যুর গান সিরিজ নিয়ে লেখা ‘শোকগাথা’ অংশে। শোকগাথা উৎসর্গ করেছেন অকাল প্রয়াত চারজন প্রতিভাবান কবিকে– শামীম কবীর, সঞ্চয় প্রথম, সুমন প্রবাহন আর তৌহিদ এনামকে। এরা বিপুল সম্ভাবনার রোদ হয়ে আসে, বিশ্বাসঘাতক অন্ধকারে ঝরে যায়।

জেনেছি মৃত্যুই ব্রহ্মাণ্ডের ছায়া
জীবন প্রতিবিম্বের তুল্য নয়

(সেলিম মোরশেদ, মৃত্যুর গান-৩)

কবি স্পর্ধা নিয়ে ঈশ্বরের সাথে আয়ুর সীমানা বাড়ানো নিয়ে কথা বলেন। অথচ রাত্রিতে তাঁর অভিজ্ঞতায় মৃত্যুর অজগর এসে কণ্ঠনালী পেঁচিয়ে ধরে পরাস্ত করতে চায়। চারপাশে মৃত্যুর ছায়া নিয়ে বেঁচে থাকাটাই একটা অবিরাম চ্যালেঞ্জ। মৃত্যুকে তিনি এনেছেন কেউটেরও উপমায়—

রাত্রিবাস এখন নির্মম
মেঘ নেই, হাওয়া স্তব্ধ
করোটিতে কেউটের পথ্য

(সেলিম মোরশেদ, মৃত্যুর গান-৭)

রাতের তারাহীন আকাশ মৃত্যুর ছবি ধরে রাখে; জীবন কিংবা রোদের বিহনে কবির রাত্রিগুলো তাই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। পাঠকের কৌতূহল নিবারণের জন্য বলেই দিলেন— ‘নিরাশার পঙক্তিতে মৃত্যু ছাড়া কি-বা দিতে পারি!’

তেমনিভাবে সতীর্থের হারিয়ে যাওয়া কিংবা নিথর-নিশ্চল হয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে কবি নিজের কথাপ্রবাহের সমান্তরাল একটি  ফল্গুধারার যত্ন করে গেছেন, তারই একত্রিত প্রকাশ এই কবিতার বই। মৃত্যুর গান নিয়ে আহমেদ নকীবের লেখা ভূমিকার কাছে ফিরে যাই, সেলিম মোরশেদের এই কবিতাগুলো নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ”কোনো ব্যক্তিক বা অতিব্যক্তিক তাড়নায় ‘মৃত্যুর গান’সহ তাঁর অন্যান্য কাব্য-যোজনা গদ্যভাষাকে ছাপিয়ে গদ্যভাষায় নিহিত কাব্যতৃষিত মন ছটফট করে উঠেছে।”

মনে পড়ে যাচ্ছে শামসুর রাহমানের ‘ইকারুসের আকাশ’ কবিতার রৌদ্রাভিসারী ইকারুসের কথাও। ‘রৌদ্রের সোনালি মদ’ তার ‘শিরায় ধরালো স্পর্ধার নেশা’। তারপর কবির মতোই—

অর্জন করেছি আমি অকাল লুপ্তির বিনিময়ে
সবার কীর্তনযোগ্য গাথা,
যেহেতু স্বেচ্ছায়
করেছি অমোঘ নির্বাচন
ব্যাপ্ত, জ্বলজ্বলে, ক্ষমাহীন রুদ্র নিজস্ব আকাশ।

(শামসুর রাহমান, ইকারুসের আকাশ)

মৃত্যুর গান সিরিজের নতুন কবিতা এখনো ফেসবুকে ভেসে আসে। তাই মনে হয়, মৃত্যুর গান হয়তো সেলিম মোরশেদের একটি প্রকল্প; যা বইয়ের মলাট বন্ধ হয়ে যাবার পরেও প্রবহমান।

 

সমসাময়িক প্রতিভাদের মৃত্যু কথন

কবি সেলিম মোরশেদ হারিয়ে যাওয়া কিংবা দূরে যাওয়া কবিদেরকেও নিজের অভিজ্ঞতায় ধারণ করেন। ‘নিমরাতে’র কবি অকালপ্রয়াত সঞ্চয় প্রথমের জন্য আজও তিনি হাহাকার করে উঠেন। এই দেশে কবিকে হাজারো মধ্যবিত্তের জীবনযাপনের নিয়মে কবিতাবিহীন জীবনকেও বয়ে চলতে হয়। কিন্তু অকালপ্রয়াত তরুণ কবিরা সেদিক থেকে ভাগ্যবান—তাঁরা যতদিন বাঁচেন, ভরপুর কবিতাময় তারুণ্য উদযাপন করেই বাঁচেন। যদিও স্বাধীনতা উত্তরকালের একই সময়ের চরিত্র সুব্রত সেনগুপ্তরা আর কবিতা পড়ে না—গুণ্ডার মতো হোন্ডা চালায়!

কবির সমসাময়িক বাংলা কবিতার মৃত্যুমুখর কিছু পঙক্তিমালায় চোখ বুলিয়ে দেখা যাক। সেলিম মোরশেদের উৎসর্গীকৃত কবি শোয়েব শাদাবকে কবিতা উৎসর্গ করে শান্তনু চৌধুরী লিখেছিলেন—

বন্ধুর মৃত্যুর পর তৃণভূমি আমাকে খুঁড়তে দাও যদি
আমি কি খুড়বো তবে পৃথিবীতে ঘুমোবার গহীন পরিখা!
কেননা, আমরা পরস্পর নিজস্ব মৃত্যুর রূপরেখা নিয়ে,
প্রাকশীতে, তাকিয়েছিলাম ওই চিরহরিৎ রহস্যপানে;
দেখেছি কল্পিত সংখ্যাগুলো যত শূন্য পরিখার।

(শান্তনু চৌধুরী, চিরহরিৎ রহস্য)

সেলিম মোরশেদের রোদ আর অন্ধকার বিপ্রতীপ–জীবন আর মৃত্যু। আর যে শোয়েব শাদাব ‘রৌদ্রের চন্দ্রিমা’ দেখেছিলেন, তাতে তিনি জীবনের মধ্যেই দেখেছিলেন মৃত্যুর সৌন্দর্য–

ফুলের কঙ্কাল থেকে নিঃসৃত সৌরভ
তরল মৃত্যুকে পান করে
বিষাদে বিনাশে হই পূর্ণাঙ্গ পুরুষ।
(শোয়েব শাদাব, স্বগতোক্তি)
কিংবা,
ওগো মৃত্যু! মানবীর রূপ ধরে এসো দেবী, ডেকে
নাও শয্যায় তোমার…অনন্ত রমণে আমি গলে
মিশে যাবো অনন্ত তোমার মাংসে মজ্জায়।

(শোয়েব শাদাব, দৃশ্যভুক)

হারিয়ে যাওয়া কবি বিষ্ণু বিশ্বাসকেও সেলিম মোরশেদ তাঁর কবিতার বইতে স্মরণ করেছেন। বিষ্ণু বিশ্বাসও মৃত্যুকে ভালবাসা একজন কবি–

ডানে-বাঁয়ে সবখানে শিলীভূত পাখিদের শব
মৃত্যু যেখানে অমর অমেয় জলের স্বপ্ন ধোয়া
বাঁশপাতা খড়খড়ি ঊষর দানোর লোহাগড়।
হয়ত থামতে হবে, বহুবার অনাত্মীয় শোকে
তোমার সোনালি জামা, হলুদ গন্ধের শাড়িখানা
উড়িয়ে নিয়েছে ঝড়।

(বিষ্ণু বিশ্বাস, ঈশ্বরের জন্মজন্মান্তর)

যে চার অকাল প্রয়াত তরুণ প্রতিভাকে সেলিম মোরশেদ স্মরণ করেছেন তাদের একজন শামীম কবীর। শামীম কবীর মনে করতেন তাঁর মৃত্যুর পরে রোদ তার নিজস্ব গরিমা হারাবে; এখানে সেলিম মোরশেদের গ্রন্থের শিরোনামের ভাবনার সাথে একাত্মতা লক্ষ্য করা যায়। দীর্ঘ কবিতায় সচ্ছল শামীম কবীর একটি ছোট কবিতায় মৃত্যুর দেশে ফেরার কথা বলে গিয়েছিলেন౼

এখন সময় হ’লো
আমার লাল ঘোড়ার গাড়িতে ফেরার
আমি দুপায়ের হাড় বাজিয়ে ফিরবো
আমার ঘরে
না কোনো ফুলের ঝাড়
কেবল মৃত্যু
আমার ঘরে কী সুন্দর সাজানো

(শামীম কবীর, আমার ঘর)

কিংবা আত্মবিধ্বংসী কবি সুমন প্রবাহন, যার ‘পকেটে অসংখ্য ছায়াপথ/ চোখে চাঁদের আকাশ, পায়ে তপ্ত কাচের কণা, ধূলিস্তর’ ফাঁসিকাষ্ঠে প্রবেশ মুহূর্তের অনবদ্য কবিতা লিখে গেছেন।

তৌহিদ এনাম দ্বিধাগ্রস্ত অস্তিত্ত্বে টের পেয়েছিলেন ‘ভাঁটায় ভেসে গেলে সমুদ্রে যাওয়া যায়’। জেনেছিলেন ‘প্রদক্ষিণে’ই নক্ষত্রের ‘অনিবার্যতা’; জেনেছিলেন ‘ঝাঁক বেঁধে দেশান্তরী পাখি’রাও ‘ঘরে ফিরে’ আসে; কিন্তু
‘তবু কেউ কেউ
ভুল করে ভুল পথে চলে যায় …’

(তৌহিদ এনাম, সংখ্যা নৃ-কল্প)

তৌহিদ এনাম চলে গেছেন।

তেমনিভাবে, অকাল প্রয়াত কবি সঞ্চয় প্রথম কবি হবার জন্যই পৃথিবীতে এসেছিলেন; চলে গেলেন মেঘমালায় দিনরাত্রির মালা গেঁথে౼

আমাদের পরাজয় যেখানে রাত্রি থেকে ঢের দূরে অনেক উঁচুতে
আকাশে উড়ে যায় ডানা দীর্ঘ নদীর মতো নিবিড় আসীনে
তার পাশে অবশেষে, চেয়ে আছে আলো
‘সে তো চলে গ্যাছে’ অপেক্ষা শিকড় বেয়ে পত্ররন্ধ্রে।

(সঞ্চয় প্রথম, দূরকথা-২)

এইসব মৃত্যুর মিছিল সেলিম মোরশেদকে বিদ্ধ করেছে নিরন্তর।

‘রহস্য প্রধান এলাকা’

প্রেমের কবিতাগুলো রহস্যময়। নিছক প্রেমের কবিতাও নয়। কিছু কবিতা চটুল, কিছু কবিতা শোকগাথার মতই করুণ।

সেলিম মোরশেদের গল্পের যে নীলচুলের মেয়েটি বিভ্রান্তির অতিমারি থেকে তার নিজের দু-চোখ বাঁচিয়েছে, এখন সে যেনবা চোখের আলোয় নীল সুতোয় সীবন করে যাচ্ছে রাত্রির আকাশ। সেই আকাশ এত গাঢ় নীল যে দূর থেকে নীলচুলের মেয়েটির চুলের মতোই কালো দেখায়। ওই দূর আকাশে কি মেয়েটির প্রয়াত প্রেমিকের বাস, যার শরীর জুড়ে এখন শুধুই শস্যদানা?

হাত দুটো তার বুকের ওপর
গুণ চিহ্নে
কাঁপা কাঁপা পাথরচাপা
হরিদ্রাভ
শুভ্র কুসুম পেলবতা উপেক্ষিত।

(সেলিম মোরশেদ, প্রেমের নীল জল)

বন্ধুদেরকে উৎসর্গ করেছেন প্রেমের পদ্যও, কিন্তু কোনো নারীকে নয়। অবশ্য ‘প্রেমের নীল জলে’র মেয়েটি একবার হারিয়ে গিয়ে আবার ফিরে এসেছে শত বছর পর। মাঝে তার অন্ত্যজেরা যুদ্ধে গেছে। এই হারিয়ে গিয়ে ফিরে আসার অর্থ কি ত্যাগী নারীটির অমরতা?

জলপাই দিনের ছড়া

সেলিম মোরশেদ ছড়া লিখেছেন ‘৭৮ থেকে ‘৮২ পর্যন্ত। সামরিক শাসনের অধীন বাংলাদেশের টালমাটাল সময়ের প্রথম পর্যায় তখন। আহমাদ মাযহার বলেছেন, ‘সত্তরের অন্তঃমিলের প্রতারক চমক এতে নেই, নেই আঙ্গিকের কঠোর যান্ত্রিক অস্বস্তি’౼

ফুলের মতো চারটি পাখি
অন্যদিকে ছুটছে!
ওদের মা’রা অন্তঃসত্ত্বা
বৃদ্ধ ওদের ঘরের কর্তা
তবুও ওরা কিসের লোভে
অন্যদিকে ছুটছে!

(সেলিম মোরশেদ, পাখি)

‘হাঁটুর মালায় উল্কি খোদাই
ছন্দে অধীনতা।

জনগণের অনেক দূরে রুটির স্বাধীনতা।’

(সেলিম মোরশেদ, বিক্ষোভ)

সেলিম মোরশেদের ছড়া কয়টি পাঠের পর মনে হয়েছে, একটি ছড়ায় সময়কে ধারণ করে হোন্ডা দাবড়ানো গুণ্ডা প্রজন্মের কথা উঠে এলেও অধিকাংশ ছড়াই চিরকালীনতা আর বর্তমানের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই রচিত হয়েছে।

উপসংহার

‘মৃত্যুর আগের দিন পড়ন্ত রোদের দিকে চেয়ে কি ভাবছিল সুকান্ত?’ – অরুণ মিত্র

প্রিয়জনের একান্ত ঘুমে আমাদের প্রবেশাধিকার নেই, এ এক মায়াবী আবিষ্কার। আমাদের অগত্যা শোকগাথায় গতায়াত। এ এক মর্মান্তিক সত্যি কথা।

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.

error: Content is protected !!