:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
সৈয়দ তারিক

কবি, ভাবুক

কাতিল শিফায়ির গজল
ব্যবহৃত শিল্পকর্ম: এ জেড শিমুল

আমার দুঃখকে বলো আমাকে কিনে নিতে

কাতিল শিফায়ির গজল

Qateel Shifai. Image Source: samaa.tv

দর্দ সে মেরা দামান ভারদে, ইয়া আল্লাহ

বেদনায় পূর্ণ করো আমার হৃদয়, ওগো আল্লাহ।

তারপর যদি ইচ্ছা হয় তোমার,
আমাকে পাগল বানিয়ে দাও, ওগো আল্লাহ।

কবে আমি চাঁদ-তারা চেয়েছি তোমার কাছে?

আমার হৃদয়কে আলোকিত কর, দুই চোখকে কর জাগ্রত, ওগো আল্লাহ।

সূর্য নামের জিনিসটাকে আমরা সবাই দেখেছি।

এখন আমাদের সত্যিকারের ভোর দাও, ওগো আল্লাহ।

হয় দুনিয়ার ব্যথা-বেদনা সারিয়ে দাও,

নয়তো আমার হৃদয়কে পাথর বানিয়ে দাও, ওগো আল্লাহ।

শুনুন- ‘দর্দ সে মেরা দামান ভারদে, ইয়া আল্লাহ’

 

মিলকার জুদা হুয়ে থো না সোয়া কারেঙ্গে হুম

যেহেতু আমাদের মিলন ও বিচ্ছেদ হয়েছে,
আমরা ঘুমাব না এরপর।

পরস্পরের স্মরণে আমরা কাঁদতে থাকব এরপর।

আমাদের অশ্রুর বন্যা রাতভর
আমাদের জাগিয়ে রাখবে।

আমাদের চোখের প্রতি পাপড়িতে
মুক্তা গাঁথব এরপর।

আমাদের বিচ্ছেদের ভাবনা যখন
আমাদের কাতর হৃদয়কে পোড়াবে,

আমাদের শরীরকে চাঁদের আলোয় স্নিগ্ধ করে নেব এরপর।

ঝড় যদি আমাদের বিভ্রান্ত করে, কাতিল,

কূলের নিকটে আমরা আমাদের নৌকা ডোবাব এরপর।

শুনুন- ‘মিলকার জুদা হুয়ে থো না সোয়া কারেঙ্গে হুম’

 

ইয়ে মোয়েজা ভি মোহাব্বত ক্যায়ি

প্রেম মাঝেমাঝে আমাকে মোজেজা দেখায়,
তোমার উপর পাথর পড়ে আর আমি জখম হই।

আপন ছায়া নিজের পায়ের নিচে দলে যাই,
শরীরটা আমার হতে পারে কিন্তু এই বিকালগুলো আমার জন্য নয়।

যখন তোমাকে দেখার ইচ্ছায় আমি বাসা ছেড়ে বের হই,
পুরো শহরে আর কেউ আমার নজরেই পড়ে না।

সে তো মেহেরবান, তবে কেন সে তার ভালোবাসার কথা স্বীকার করে না?
সে নিজেই অবিশ্বস্ত তাই শতবার আমার পরীক্ষা নেয়।

আমি নিজেই নিজের মতো নিলামে চড়ছি,
আমার দুঃখকে বলো আমাকে কিনে নিতে।

শুনুন- ‘ইয়ে মোয়েজা ভি মোহাব্বত ক্যায়ি’

 

ইক ইক পাত্থর জদ কে ম্যেয়নে

ইটের পর ইট গেঁথে দেয়ালটি তৈরি করেছি আমি,
যদি এর পিছনে তাকাই, ব্যথা ছাড়া আর কিছু নাই।

মনে হয়, ঘুমে থাকি কিংবা জাগরণে  অন্যদের ক্রীতদাস আমি,
চোখদুটো কেবল আমার, ঘুম অন্য কারো।

গাঢ় নীল জলরাশির দিকে সবাই তাকিয়ে আছে বিস্ময় নিয়ে,
কিন্তু কার সাহস আছে যে সাগরের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, আসলে সে কতটা গভীর?

সকলেই বলে, পৃথিবীতে একটি স্বর্গ রয়েছে,
আমি অবাক হয়ে ভাবি, আমার দৃষ্টিই বুঝি ওটা দেখতে পাওয়ার মতো ভালো নয়।

বাইরে উঠানের গাছে কিছু জোনাকি জ্বলছে,
ঘরের ভিতরে কে আগুন জ্বাললো এটা নিয়ে অবাক হওয়ার কী আছে?

শহরের কিছু ছায়ার কাছ থেকে জানতে পেরেছি আমি আজ,
সবচেয়ে বড় চালাকি হলো নিজের ধারাকে অবিরাম বদলাতে থাকা।

আজ অনেক জনে প্রেমের ফুলদানি ভেঙেছে, ওগো প্রিয়,
ভেবো না যে কেবল তোমার প্রিয়তমই এত বিশ্বাসঘাতক।

শুনুন- ‘ইক ইক পাত্থর জদ কে ম্যেয়নে’

 

সাদমা তো হ্যায় মুঝে

আমিও ব্যথাতুর যে আমি তোমার কাছ থেকে আলাদা হয়েছি;
তারপর অবাক হয়ে ভাবি, এখন আমি তোমার কী হই?

তোমার নিজের ঘরে তোমার অস্তিত্ব ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে,
খামাখাই আমি লোকের ভীড়ে আর মাহফিলে তোমাকে খুঁজে ফিরি।

আত্মহত্যার অপরাধ আমি স্বীকার করি,
অনেকদিন ধরে দেহের কবরে সমাহিত আছি আমি।

কোন-কোন নাম আমি মুখে নেব?
যেহেতু তোমার সাথে নতুন একজন করে দেখতে পাই।

অবাক হয়ে ভাবি, কী সুন্দর করে আমার নাম নিতে তুমি,
সারা দুনিয়া জানে আমিই তোমার সবকিছু।

হে আমার প্রেমের প্রতিদ্বন্দ্বী, আমার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নাও,
আমি তো তোমার চেয়ে দু-চার বছরের বড়।

এই আয়না হলো জাগ্রত চেতনা, ওহে কাতিল,
ঘুমাতে যাবার আগে রোজ আমি এটা দেখি।

শুনুন- ‘সাদমা তো হ্যায় মুঝে’

 

জিন্দেগি মেয়ঁ তো সাবহি পিয়ার কিয়া করতে হ্যাঁয়

জীবনে সবাই কাউকে ভালোবাসে
আমি মরে গিয়েও তোমাকে ভালোবাসব।

তোমার সাথে দেখা হবার পর থেকে আমার মনে হয়েছে
ভালোবাসার জন্য এই জীবন খুবই ছোট।

জগতের যে দুঃখের জন্য কেউ সমস্ত জীবন উজাড় করে দিতে পারে
এমনকি সেই শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত, আমি তোমাকে উৎসর্গ করেছি।

তোমার জন্য আমি জীবন দিয়ে দেব, এত ভালোবাসি তোমাকে
যেন আমার গানে আমার আবেগ প্রকাশ করতে পারি।

তোমাকে আমার হৃদয়ে রেখেছি হৃৎস্পন্দনের মতো
কী করে তোমার কাছ থেকে আলাদা হবার চিন্তা করতে পারি আমি?

ভাগ্যের কাছ থেকে তোমাকে নিজের জন্য চুরি করেছি আমি
তোমার ভালোবাসার দেখভালওয়ালা হব আমি, এত ভালোবাসি তোমাকে।

তোমার পদধ্বনি আমার চিন্তাকে প্রজ্বলিত করে
যখনই তুমি দেখা দাও তা যেন জাদুর মতন।

যদি আমি তোমাকে ছুঁই, ওগো প্রাণেশ্বরী
আমার শরীর থেকে তোমার সুরভি বের হয় দীর্ঘক্ষণ ধরে।

তুমিই সে, যার সম্পর্কে বসন্ত বলে যায়, এত ভালোবাসি তোমাকে।

শুনুন- ‘জিন্দেগি মেয়ঁ তো সাবহি পিয়ার কিয়া করতে হ্যাঁয়’

 

আপনায় হোঠোঁ পার সাজানা চাহতা হুঁ

সারাক্ষণ তোমার কথাই বলতে চাই আমি,
সারাক্ষণ তোমার নামই গুনগুন করতে চাই।

কখনও অশ্রু যদি ঝরে পড়ে তোমার কোলে,
প্রতিটা ফোঁটাকে আমি মুক্তা বানাতে চাই।

তোমাকে স্মরণ করতে করতে আমি হয়রান হয়ে গেছি,
আমি চাই এখন তুমি আমাকে স্মরণ কর।

সারা শহরে অন্ধকার নেমে আসছে,
আলোর জন্য আমি আমার ঘরকে জ্বালিয়ে দিতে চাই।

তোমার কোলে ঘুমাতে ঘুমাতে আমি এই দুনিয়া ছেড়ে যেতে চাই,
এমনকি চাই আমি, আমার মৃত্যু কাব্যিক হোক।

শুনুন- ‘আপনায় হোঠোঁ পার সাজানা চাহতা হুঁ’

 

কিয়া হ্যায় পিয়ার জিসে হুমনে জিন্দেগি কি তারহা

একজনকে ভালোবাসতাম আমি নিজের জীবনের মতো,
সেই চেনা জন আমার সাথে দেখা করত যেন আমি অচেনা আগন্তুক।

যে জানে যে আঁধার ঘনাবে
সেও চাঁদের আলোর মতো মেঘের কোলে লুকিয়ে যাবে।

আমার তৃষ্ণা বাড়তেই সে আমার হাত ছেড়ে দিল,
সেই নম্রতা প্রেমের ভুল ব্যাখ্যা দেয়।

কখনও কাতিলকে তার জন্য ধন্যবাদ দেবার কথা ভাবিনি,
সেও আমাকে অন্য সবার মতোই দুঃখ দেবে।

এ বড় বেদনা যে সেও আমার হলো না,
সেই বেদনাকে আমি খুশি মনেই নিলাম।

শুনুন- ‘কিয়া হ্যায় পিয়ার জিসে হুমনে জিন্দেগি কি তারহা’

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.