:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
ইহতিশাম আহমদ

পরিচালক, সমালোচক

শুটিং বিড়ম্বনা (পর্ব-৩)
প্রচ্ছদ: রাজিব রায়

চলচ্চিত্রিক মানসিকতা – ৭

শুটিং বিড়ম্বনা (পর্ব-৩)

শুটিং বিড়ম্বনা (পর্ব-২)-এর পর থেকে-

আমার ছাত্রদের মাঝে ২/১ জন বর্তমানে নিয়মিত টিভি নাটক বানাচ্ছে। শর্ট ফিল্ম বানাচ্ছে অনেকেই। আর বেশির ভাগই বিভিন্ন টিভি নাটক বা চলচ্চিত্র পরিচালেকের সহকারী হিসাবে কাজ করছে। দুই একজন এ্যাড ফার্মের সাথেও যুক্ত রয়েছে। পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানানোর উদ্যোগ বেশ কয়েকজনই নিয়েছিল কিন্তু নানাবিধ কারণে শেষ পর্যন্ত তা ব্যাটে বলে হয় নাই।

তো, আমার এক ছাত্রের সেটে আমি সকাল থেকে উপস্থিত। চুপচাপ দেখছি ছাত্র কিভাবে কি করছে। সেটে নায়ক এসেই প্রথমে কিছুক্ষণ বিভিন্ন ধরণের জ্ঞান ঝাড়ল। প্রায় এক ঘন্টার মত সেটের সবাই তার কথা শুনল। তারপর সে মেকআপে বসল। ছেলেদের মেকআপে খুব একটা সময় লাগার কথা না। কিন্তু সে তার নিয়মিত চেহারার মাঝে একটা পরিবর্তন আনতে চায়। সুতরাং পরিচালককে বলল সে এই জাতীয় একটা গোঁফ লাগাতে চায়। এটা নাকি এই চরিত্রের সাথে ভাল যাবে। পরিচালক একটু চিন্তা করে রাজি হয়ে গেল। সুতরাং নায়কের ঠোঁটের উপরে একটা গোঁফ যুক্ত হল।

এরপর নায়ক লোকেশনে দাঁড়িয়ে বলল, “এটা তো প্রথম সিন। এক কাজ করো ভাইয়া তুমি ক্যামেরাটা এখানে বসাও। আমি এই দিক দিয়ে এভাবে হেঁটে যাবো। ভাল দেখাবে।” পরিচালক আবারও রাজী হল। ২ কি ৩ টেকে শট ওকে। এর পরের দৃশ্যের আয়োজন শুরু হল। নায়ক আবারও তার সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিল। কোথায় কি হবে না হবে গাইড করতে লাগল। আমি আমার ছাত্রটিকে এক পাশে ডেকে এনে বললাম, “কি হচ্ছে এটা? তুমি পরিচালক না সে পরিচালক?” ছাত্রটি বলল, “আমি যেভাবে ভেবে রাখছিলাম, তার থেকে খুব একটা আলাদা কিছু বলতেছে না নায়ক। তাই চুপ করে আছি।”

ছাত্রের উত্তরে আমি সন্তুষ্ট হতে পারলাম না। অভিনেতা অভিনয় করবে। সেটাই তার কাজ। তাছাড়া নায়ক তো শুধু তার চরিত্রটি সম্পর্কে জানে। পুরো নাটকটা নিয়ে তো তার আইডিয়া নাই। তাহলে সে ডিরেকশন দিতে যাবে কেন? আর যে মানুষটা ডিরেকশন নিয়ে সারাক্ষণ মেতে আছে তার থেকে ভাল ডিরেকশন দেয়ার ক্ষমতা তো অন্য কারো থাকার কথা না। নুতন ডিরেক্টর পেলেই অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে অনেক আর্টিষ্ট এই কাজটি করে, যা মোটেই গ্রহণ যোগ্য নয়। এক্ষেত্রে তারকা অভিনেতাদের কমন ব্যাখ্যাটি হল, তার যে ইমেজটা সে অনেক কষ্ট করে তৈরি করেছে, এই নুতন পরিচালক সেটা নষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই এই সতর্কতা।

ভাইরে, আপনার যদি মনেই হয়, এই তরুণ পরিচালক আপনার ইমেজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মানের কাজ করতে পারবে না, তো তার কাজ আপনি করতে রাজি হলেন কেন? কেউ তো আপনাকে বাধ্য করছে না। আর যদি টাকার জন্যেই রাজি হয়ে থাকেন, তো টাকা নিয়েই না হয় সন্তুষ্ট থাকেন। মানের ব্যাপারটাতে ছাড় দেন। তবুও যার কাজ তাকেই করতে দেন।

আসলে এক সাথে দুই কাজ সব সময় করা যায় না। এক কালে মঞ্চ নাটকে ডিরেকশন দিয়েছি অনেক। অভিজ্ঞতা থেকে বলছি- মাঝে মাঝেই শিল্পী সংকটের কারণে আমাকে কোন চরিত্র করতে হত। এবং পুরো নাটকে সবচেয়ে খারাপ পারফরমেন্স হত আমার। কারণ, কে কি করল, সবার অভিনয় ঠিক মত হচ্ছে কিনা, ব্যাক স্টেজে সবাই ঠিক মত কাজ করতে পারল কি না, এসবের চিন্তা নিয়ে নিজের অভিনয়টা ঠিক মত করতে পারতাম না।

অভিনেতা অভিনয় করবে। সেটাই তার কাজ। তাছাড়া নায়ক তো শুধু তার চরিত্রটি সম্পর্কে জানে। পুরো নাটকটা নিয়ে তো তার আইডিয়া নাই। তাহলে সে ডিরেকশন দিতে যাবে কেন? আর যে মানুষটা ডিরেকশন নিয়ে সারাক্ষণ মেতে আছে তার থেকে ভাল ডিরেকশন দেয়ার ক্ষমতা তো অন্য কারো থাকার কথা না। নুতন ডিরেক্টর পেলেই অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে অনেক আর্টিষ্ট এই কাজটি করে, যা মোটেই গ্রহণ যোগ্য নয়।

এমনও হয়েছে, অভিনয় চলাকালীন আমি সংলাপ ভুলে গেছি। মাঝ থেকে ২/৩ লাইন বাদ দিয়ে ডায়লগ বলে যাচ্ছি। অথচ রিহার্সেলে সবাইকে ডায়লগ ঠিক মত না দেয়ার কারণে প্রতিদিন বকাঝকা করি। আমার কো-আর্টিষ্ট মেয়েটি, যে কিনা আমারই কাছে অভিনয় শিখেছে, দর্শকদের দিক থেকে একটু ঘুরে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে মিচকি একটা হাসি দিয়ে বলতে শুরু করল, “তোমার ছেলে চাচা, শুধু লাইন ছাড়া নয়, তার কোন লাইনই নেই।” বুঝলাম যে কয়টা লাইন আমি মিস করে গেছি আমার ছাত্রীটি তার আগে থেকে আবার শুরু করেছে। এবার আমার সব লাইন পড়ে গেল এবং নাটকটি তার নিজের গতিতে চলতে লাগল।

তবে নাটকটির ডায়লগ সমস্যা মিটলেও আমার পারফরমেন্সের মানগত কোন উন্নতি সেদিন হয়নি। কারণটা আর কিছুই না, ভাল অভিনয় করতে গেলে চরিত্রের ভিতরে ঢুকে যেতে হয়। আর তার জন্যে দরকার একাগ্রতা এবং রিহার্সেল। আমাদের বর্তমান টিভি নাটক বা সিনেমায় রিহার্সেলের প্রচলন তো কবেই উঠে গেছে। বাকি যে একাগ্রতা রয়েছে তা যদি ক্যামেরা কোথায় বসবে, সিনটা গাছের তলায় হলে ভাল নাকি বারান্দায় হলে ভাল, এই সব চিন্তার পিছনে ব্যয় হয়, তো অভিনয়ের কি হবে?

যাহোক, আমার ছাত্রটি একটি দৃশ্যে এসে নায়ক সাহেবের পরিকল্পনা মানতে রাজি হল না। ব্যস, তর্ক লেগে গেল। নায়ক তার আইডিয়ার চেয়ে পরিচালকের আইডিয়া কেন ভাল তার ব্যাখ্যা চেয়ে বসল। এটা করার অধিকার একজন অভিনেতার নেই। মঞ্চ নাটকে তবুও পরিচালকের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার কিছুটা সুযোগ রয়েছে। কিন্তু টিভি নাটক বা সিনেমায় সেই সুযোগ একেবারেই নেই।

মঞ্চ নাটকের ক্ষেত্রে পুরো নাটকটা কি হতে যাচ্ছে তা একজন অভিনয় শিল্পী রিহার্সেল করতে করতেই জানতে পারছে। অপর দিকে টিভি নাটক বা সিনেমায় কোন শটটির পরে কোন শট লাগানো হবে, আদৌও এই শটটি ব্যবহার করা হবে কি না অথবা এখানে কোন এফেক্ট যুক্ত হবে কি না, এসবের কিছুই কিন্তু একজন অভিনেতার পক্ষে জানার সুযোগ নেই। এটা কেবল পরিচালকই জানে। আর এ জন্যেই ফিল্মকে বলা হয় ডিরেক্টরস মিডিয়া।

মাঝে মাঝে এমনও হয়, কোন কোন দৃশ্যের ক্ষেত্রে ফাইনালি কি দাঁড়াবে সেটা নিয়ে পরিচালক নিজেই দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগে। তাই নিরাপদ থাকার জন্যে সেই দৃশ্যকে পরিচালক কয়েক ভাবে শুট করে নেয়। এডিটিংয়ের সময়ই চুড়ান্ত হয়, কোন শটটা কাজের আর কোনটা কাজের নয়। সুতরাং এ ক্ষেত্রে একজন অভিনেতার এই শটটা কেন এমন করে নেয়া হবে না বা অমন করে কেন নেয়া হবে, এই প্রশ্ন করাটা শুধু অযৌক্তিকই নয়, আমার মতে অনৈতিকও বটে। এই নিয়ে প্রখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের একটা বক্তব্য মনে রাখার মতো। তিনি বলেছিলেন, “Only Director knows what is in the Film.”

তো, নায়ক এবং আমার ছাত্রটির মাঝে তর্ক চলল কিছুক্ষণ। শেষে নায়ক রণে ভঙ্গ দিল। কারণ নৈতিক ভাবে সে পরিচালকের কথা মত অভিনয় করতে দায়বদ্ধ। কিন্তু নবীন এক পরিচালকের কাছে এই পরাজয় সে মেনে নেবে কেমন করে? সুতরাং নুতন উপদ্রব শুরু হল। নায়ক আর আর আগের মত পারফর্মেন্স দিচ্ছে না। একবার টেক হয়, দুইবার টেক হয়, বার বার টেক হয়, রাত প্রায় ২টা পর্যন্ত শুটিং চলল। তার সেই ঝিমানো পারফর্মেন্সের কোন পরিবর্তন নেই।

এক পর্যায়ে পরিচালক তার সহকারী আর ক্যামেরাম্যানকে দৃশ্য বুঝিয়ে দিয়ে অন্যখানে গিয়ে বসে থাকল। আমি তার কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম, ‘শুটিং শেষ?’ আমার ছাত্রটির কন্ঠে হাহাকার শুনলাম, ‘আর শুটিং। করতেছে ওরা… এই নায়কের সাথে যদি আমি আর কোনদিন কাজ করছি।’ আমি কিছু বললাম না। আসলে এখানে বলার কিছুই নেই। এই পোড়া দেশে অন্যান্য অনেক সেক্টেরের মতো চলচ্চিত্র বা টিভি নাটকের ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বের বড়ই অভাব।

মাঝে মাঝে এমনও হয়, কোন কোন দৃশ্যের ক্ষেত্রে ফাইনালি কি দাঁড়াবে সেটা নিয়ে পরিচালক নিজেই দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগে। তাই নিরাপদ থাকার জন্যে সেই দৃশ্যকে পরিচালক কয়েক ভাবে শুট করে নেয়। এডিটিংয়ের সময়ই চুড়ান্ত হয়, কোন শটটা কাজের আর কোনটা কাজের নয়। সুতরাং এ ক্ষেত্রে একজন অভিনেতার এই শটটা কেন এমন করে নেয়া হবে না বা অমন করে কেন নেয়া হবে, এই প্রশ্ন করাটা শুধু অযৌক্তিকই নয়, আমার মতে অনৈতিকও বটে।

পেশাদারিত্বহীনতার আরেকটি উদাহরণ দেই। এটাও আমার এক ছাত্রের টিভি নাটক। এডিটিং শেষ করার পরে সে এসেছে আমাকে দেখাতে। নাটকটিতে দুই নায়িকা রয়েছে। এক নায়িকাকে দেখিয়ে সে বলল, ‘ভাই এই মেয়ে পাক্কা তিন ঘন্টা ধরে মেক আপ করছে। এই তিন ঘন্টা আমরা বসে বসে ফ্যানের বাতাস খাইছি। বলেন, এই মেক আপ করতে তিন ঘন্টা কেমন করে লাগে?’ যথারীতি আমার কোন উত্তর নেই। শুধু সান্তনা দিয়ে বলেছি, ‘আমি ত্রিকোন চলচ্চিত্র শিক্ষালয় তো শুরুই করছি এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্যে। লেগে থাকো, তোমাদের হাতেই এর পরিবর্তন হবে একদিন।’

এবার সরাসরি চলচ্চিত্রের একটা ঘটনা বলি। বিগ বাজেটের কাজ। বিশাল রাজকীয় সেট। নায়িকার গায়ে রাজকীয় পোষাক। যে পোষাকটা পরতে ঘন্টা খানেকের মত সময় লাগে। বেশ কয়েকজন সিনিয়র ও জুনিয়র নায়ক রয়েছে দৃশ্যটিতে। বলাই বাহল্য, এতজন তারকাকে এক সাথে এক জায়গায় আনতে পরিচালকে বেশ কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে। আজকের শুটিংটা যেন ভালোয় ভালোয় শেষ হয়, পরিচালক আর প্রযোজক মনে মনে সেই দোয়াই করছে। আবার সবাইকে এক সাথে পাওয়ার সুযোগ হয়ত নাও পাওয়া যেতে পারে।

দুপুরের খাওয়া হয়ে গেছে সবার। শুধু নায়িকা বাকি। সে নির্দিষ্ট একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টের র্নিদিষ্ট খাবার ছাড়া খাবে না। এক প্রডাকশন বয় সেই বিশেষ খাবারটি আনতে গেছে। ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যামের তো কোন মা বাপ নেই। তাছাড়া সবার খাওয়ার ব্যবস্থা হওয়ার পরেই প্রডাকশন বয়টি নায়িকার খাবার আনতে গেছে। অন্য দিন হলে সমস্যা হত না। কিন্তু আজ এত লোক, এত বড় আয়োজন, তাই কারো বাড়তি আবদার সময় মত রাখা বেশ কষ্ট সাধ্য।

বেলা একটা থেকে দুইটা, দুইটা থেকে তিনটা পার হয়ে গেছে। নায়িকা খালি পেটে আর অভিনয় করতে পারছে না। সকাল থেকে সে শুধু ফলের রস খেয়ে আছে। সেটে এখনও কয়েক জনের খাবারের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু নায়িকা তার র্নিদিষ্ট খাবার ছাড়া খাবেই না। ফোন করে জানা গেল খাবার আসতে আরো অন্ততঃ ৩০ মিনিট লাগবে। নায়িকা রেগেমেগে মেকআপ রুমে গিয়ে বসে থাকল। সে আর কাজ করবে না। তার পোষাকও সে খুলে ফেলল। এদিকে অর্ধেকেরও বেশী কাজ বাকি।

এই খবর পেয়ে পরিচালক তো অগ্নিশর্মা। সহ্যেরও একটা সীমা আছে। সে মেকআপ রুমে এসে নায়িকাকে আচ্ছা মত গালি দেয়া শুরু করল। রীতিমত ‘চ’ বর্গীয় গালি। নায়িকার সাথে বেশ কয়েকজন লোক সব সময়ই থাকে। একজন ড্রাইভার, একজন বডিগার্ড, একজন ব্যাগ বহনকারী, একজন বাতাস করার জন্যে, একজন তার ম্যানেজার। এই সিনেমার বাজেট থেকেই সবার খাওয়া, যাতায়াত ইত্যাদির ব্যবস্থা হচ্ছে। পরিচালকের প্রশ্ন, নায়িকার এই লোকগুলো তাহলে কি করছে? আজ সেটে অনেক বেশি কাজের চাপ। আজ অন্ততঃ নায়িকা তার খাবারের ব্যাপারে কন্সিডার করতে পারত। আর এই নির্দিষ্ট রেস্টুরেন্টের র্নিদিষ্ট খাবারটা যদি এত জরুরীই হয় তো তার নিজের লোকদের কেন পাঠালো না?

পুরো বিষয়টাতে পরিচালক এতোটাই উত্তেজিত যে সে নায়িকার বডিগার্ডের গালে কষে একটা চড় মেরে দিল। অনেকটা ঝিকে মেরে বউকে বোঝানো। এর মধ্যে খাবারও চলে এসেছে। পরিচালক নায়িকাকে ১৫ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে সেটে আসার অদেশ দিয়ে মেকআপ রুম থেকে বের হয়ে আসলো। নায়িকা কাঁদতে কাদঁতে রেডি হয়ে ১৫/২০ মিনিট পরে সেটে আসল।

যদিও চড় মারার বিষয়টা নিয়ে পরে অনেক কথা উঠেছিল। কিন্তু পরিচালক যদি সেদিন এতটা শক্ত হতে না পারতেন তবে এক চাইনিজ খাবারের জন্যে সেই সিনেমাটার কি অবস্থা হত ভাবতে পারেন?

চলবে…

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.