:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
ফজল হাসান

গল্পকার, অনুবাদক

যে ছেলেটি ঈশ্বরের বিরোধিতা করেছিল
প্রচ্ছদ: রাজিব রায়

কমলা দাস-এর অণুগল্প

যে ছেলেটি ঈশ্বরের বিরোধিতা করেছিল

যে ছেলেটি ঈশ্বরের বিরোধিতা করেছিল

সন্নাসী ছেলেটিকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করে:
‘এই ছেলে, পৃথিবীতে তুমি কাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসো?’
‘আমার মাকে,’ বললো ছেলেটি।
‘তা ঠিক না,’ সন্নাসী বললো। ‘তোমার মা একজন নারী মাত্র। ঈশ্বরকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে হয়। সবকিছুর মূলে রয়েছেন ঈশ্বর। প্রয়োজন হলে ঈশ্বরের আদেশে মাকে খুন করার জন্য তৈরি থাকতে হবে।’
‘আমি কখনোই মাকে খুন করবো না,’ ছেলেটি বললো।
‘তাহলে তুমি ঈশ্বরের বিরোধিতা করছো, তাই কী?’ রাগী গলায় বললো সন্নাসী।
‘আমি যদি মাকে খুন করি, তাহলে রাতে কে আমার পাশে শোবে? আমার ভয় অন্ধকার।’

সন্নাসী তার পবিত্র পাত্র থেকে একটা চকলেট বের করে এবং ছেলেটিকে দিয়ে বললো, ‘এটা খাও। ঈশ্বরের দেওয়া প্রসাদ।’
ছেলেটি খুশি হয়ে খায় এবং তৎক্ষণাৎ সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

সন্নাসী বললো, ‘ওম্ নামাহ্ শিবা ।’

 

পবিত্র গাভী

একদিন ছেলেটি যখন রাস্তার পাশে ময়লার গাদা থেকে কলার খোসা তুলে খাচ্ছিল, তখন কলার খোসার জন্য একটা গাভী এসে ওকে গুতা মারে।
ছেলেটির মন খারাপ হয়ে যায় এবং সে গাভীটাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। জোরে হাম্বা করতে করতে গাভীটা রাস্তা দিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।

তড়িৎ গতিতে সন্নাসীরা সেখানে এসে জড়ো হয়।

‘তুমি কী গাভীকে আঘাত করেছ?’ সন্নাসীরা ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করে।
‘আমি আঘাত করিনি,’ বললো ছেলেটি। ‘আমি কলার খোসা খাচ্ছিলাম। গাভী এসে সেটা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তাই আমি তাড়িয়ে দিয়েছি।’
‘তোমার ধর্ম কী?’ সন্নাসীরা জিজ্ঞাসা করে।
‘ধর্ম? সে-টা আবার কী জিনিস?’ ছেলেটি পাল্টা জিজ্ঞাসা করে।
‘তুমি কী হিন্দু? মুসলমান? খ্রিষ্টান? তুমি কী মন্দিরে যাও, নাকি মসজিদে?’
‘আমি কোথাও যাই না,’ বললো ছেলেটি।
‘তাহলে তুমি প্রার্থনা করো না?’ সন্নাসীরা পুনরায় জিজ্ঞাসা করে।
‘আমি কোথাও যাই না,’ পুনরায় বললো ছেলেটি। ‘আমার কোন সার্ট নেই। প্যান্টটাও ছেঁড়া।’

সন্নাসীরা নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে।

‘নিশ্চয়ই তুমি একজন মুসলমান। গাভীকে আঘাত করেছ?’
‘আপনারা কী গাভীর মালিক?’ ছেলেটি জিজ্ঞাসা করে।

সন্নাসীরা ছেলেটির টুঁটি চেপে হত্যা করে এবং তারপর ময়লার গাদায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়।

সন্নাসীরা বললো, ‘ওম্নামাহ্শিবা।’

 

পবিত্র গ্রন্থ

বইয়ের দোকানের কর্মচারী ছেলেটির হাত থেকে পবিত্র কোরান শরীফ মেঝেতে পড়ে যায়।
‘তুই কোরান ফেলে দিয়েছিস!’ দোকানের মালিক আর্তচিৎকার করে ওঠে। ‘তোর কত বড় আস্পর্ধা।‘

‘আজ আমি এক গ্লাস পানিও পান করিনি। ক্ষুধায় আমার মাথা ঘুরছে। সেই কারণে আমার হাত ফসকে গ্রন্থটি পড়ে গেছে।’

‘নিকুচি করি তোর মিথ্যা অজুহাত এবং আল্লাহর দোহাই! আমি অইসব বাজে প্যাঁচাল শুনতে চাই না।’

দোকানের মালিক ছেলেটির বুকে একটা ছুড়ি ঢোকায়।’

হে আল্লাহ্‌! তোমার অপার মহিমা।’

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.