:
Days
:
Hours
:
Minutes
Seconds
Author Picture
মুম রহমান

গল্পকার, অনুবাদক ও চলচ্চিত্র সমালোচক

সে বেশ্যার প্রতি যে আমার কবিতা নিয়ে গেছে
প্রচ্ছদ: রাজিব রায়

চার্লস বুকোস্কি'র কবিতা

সে বেশ্যার প্রতি যে আমার কবিতা নিয়ে গেছে

মিনিস্কার্ট পরা এক মেয়ে বাইবেল পড়ছে আমার জানালার বাইরে

রবিবার, আমি খাচ্ছি একটা
গ্রেপফ্রুট, চার্চ সমাপ্ত হলো রাশিয়ান
অর্থোডক্স
পশ্চিমের।

সে কালো
পুবের গোত্রদের মতো
বিশাল বাদামি চোখ তার বাইবেল থেকে ওপরে তাকাল
তারপর আবার নামাল। একটা ছোট্ট লাল-কালো
বাইবেল, এবং যখন সে পড়ছে
তার পা নাচাচ্ছিল, নাচাচ্ছিল,
সে এক মৃদু ছন্দের নৃত্য
বাইবেল পড়ার কালে…

লম্বা সোনার দুল
দুই হাতে দুটো করে সোনার ব্রেসলেট
আর একটা মিনি-স্যুট পরা, আমার ধারণা,
কাপড়টি তার শরীরকে আলিঙ্গন করছে,
সেই কাপড়ের ভেতরে হালকাতম বাদামি ত্বক,
সেই এইভাবে ওইভাবে পাক খায়,
দীর্ঘ লম্বা হলদে পা সূর্যের আলোয় উষ্ণ…

তার সত্তায় কোনো পলায়নপরতা নেই,
কোনো বাসনাও নেই…

আমার রেডিও ঐকতানের সুর বাজাচ্ছে
যেটা সে শুনতে পাচ্ছে না
কিন্তু তার নাড়াচড়া যেন কাকতালীয়ভাবে
সেই সুরেই হচ্ছে
ঐকতানে…

সে কালো, সে কালো মেয়ে
সে ঈশ্বরের কথা পড়ছে
আমিই ঈশ্বর।

 

সে বেশ্যার প্রতি যে আমার কবিতা নিয়ে গেছে

কেউ কেউ বলে থাকে আমরা ব্যক্তিগত মনস্তাপগুলো
দূরে রাখব
কবিতা থেকে,
বিমূর্ত থাকব, আর এটার পেছনে কিছু কারণ আছে,
কিন্তু যিশু;
বারোটা কবিতা চলে গেছে আর কোনো কার্বন কপি রাখি নাই
আর তুমি
আমার
আঁকা ছবিও নিয়ে গেছ, আমার সেরাগুলো; এটা শ্বাসরুদ্ধকর:
তুমি কি চেষ্টা করছ আমাকে পিষে ফেলতে
অন্যদের মতো?
কেন তুমি আমার টাকা নাওনি? সাধারণত ওরা
ঘুমন্ত মাতালের পকেট থেকে ওটা নেয়
এক কোনায়।

পরেরবার আমার বাম হাত নিয়ে যেয়ো অথবা অর্ধেকটা
কিন্তু আমার কবিতা নিয়ো না:
আমি শেকসপিয়ার নই
কিন্তু কখনোবা নেহাত
আর কিছুই থাকবে না বাকি, বিমূর্ত অথবা অন্য কিছুও;
সব সময়ই টাকা আর বেশ্যা আর
মাতাল থাকবে
শেষ বোমা ফেলা পর্যন্ত
কিন্তু ঈশ্বর বলেছেন,
পায়ের ওপর পা তুলে,
আমি দেখছি অনেক কবিই সৃষ্টি করেছি
কিন্তু খুব বেশি সৃষ্টি হয়নি
কবিতা।

 

এই কবি

এই কবি ২ কিংবা ৩ দিন ধরে মাল খেয়ে যাচ্ছিল আর সে মঞ্চ থেকে নেমে হাঁটা দিল আর তাকাল দর্শকের দিকে আর সে শুধু জেনেছিল সে এটা করতে যাচ্ছে। মঞ্চে একটা গ্র্যান্ড পিয়ানো ছিল আর সে হেঁটে গেল আর ঢাকনা খুলল আর বমি করে দিল পিয়ানোর ভেতর। তারপর সে ঢাকনাটা বন্ধ করল আর তার পাঠ শুরু করল।
তাদেরকে পিয়ানোর সবগুলো তার সরাতে হলো আর সেটার ভেতরটা পরিষ্কার করতে হলো আর নতুন তার লাগাতে হলো।
আমি বুঝতে পারি কেন আর কোনো দিন ওরা তাকে দাওয়াত করেনি। কিন্তু সে যে একজন কবি ছিল যে পছন্দ করে গ্র্যান্ড পিয়ানোতে বমি করা, এ কথাটা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রচার করা অনুচিত ছিল।
তারা কখনোই তার পাঠ করার গুণকে বিবেচনায় আনেনি। আমি এই কবিকে জানি : সে নেহাতই আমাদের বাকি সবার মতোই : সে টাকার জন্য যে কোনোখানে বমি করে দেবে।

 

স্বীকারোক্তি

মৃত্যুর অপেক্ষায় আছি
একটা বিড়ালের মতো
যেটা ঝাঁপিয়ে পড়বে
বিছানায়

আমি অনেক বেশি দুঃখিত
আমার বউয়ের জন্য

সে দেখবে
নিথর
সাদা
শরীরটা
একবার একে ঝাঁকাবে, তারপর
হয়তো
আবার

‘সোনা!’
সোনা কথা
বলবে না।

আমার মৃত্যু আমাকে
ভাবায় না, আমার স্ত্রীর কথা ভাবি
তাকে রেখে যাব
বিরাট
শূন্যতায়।

আমি চেয়েছিলাম
তাকে জানাতে
যদিও
সেই রাত্রিগুলো
তার পাশে ঘুমিয়ে ছিলাম

যদিও অর্থহীন
তর্ক করেছিলাম
সেই সবকিছু
সদা চমৎকার ছিল

আর কড়া
কথাগুলো
যা সদাই ভয় পেতাম
বলতে
এখন পারব
বলতে :
আমি ভালোবাসি
তোমাকে।

 

আমার বিড়ালেরা

আমি জানি। আমি জানি।
ওরা সীমিত, ভিন্নতা আছে
চাহিদায় এবং
চিন্তায়।

কিন্তু আমি দেখি আর শিখি ওদের কাছ থেকে।
ওরা যে সামান্যটুকু জানে আমি তা পছন্দ করি
সেইটুকুই অনেক
বেশি।

তারা অভিযোগ করে কিন্তু কখনোই
দুশ্চিন্তা করে না,
তারা হাঁটে বিস্ময়কর সম্ভ্রমে।
তারা ঘুমায় সরাসরি এমন সরলতায়
মানুষ যেটাকে পারবে না
বুঝতে।

তাদের চোখ অনেক বেশি
সুন্দর আমাদের থেকে।
আর তারা ঘুমাতে পারে ২০ ঘণ্টা
দিনে
কোনো রকম
দ্বিধা বা
অনুতাপ ছাড়াই।

যখন আমি অনুভব করি
হতাশা
যা কিছু আমার করতে হয় তা হলো
আমার বিড়ালদের দেখা
আর আমার
উদ্যম
ফিরে আসে।

আমি পাঠ করি
এই প্রাণীদের।

তারা আমার
শিক্ষক।

 

আরও পড়ুন- চার্লস বুকোস্কি এক পাগলা ঘোড়া

Meghchil   is the leading literary portal in the Bengali readers. It uses cookies. Please refer to the Terms & Privacy Policy for details.